বছর ঘুরে আমাদের মাঝে হাজির হলো প্রতি বছরের ন্যায় পবিত্র মাহে রমজান। প্রতি বছর আনন্দময় রমজানের আগমনী বার্তার সাথে সাথে মানুষের মাঝে অনাকা্িক্ষত উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। অসাধু-কালোবাজারিরা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নাগালের বাহিরে নিয়ে যায়। অন্যান্য বছরের ন্যায় এবার ব্যতিক্রম হয় নি। এসব ব্যবসায়িরা সিন্ডিকেট করে মালামাল বিক্রি করে থাকে। তবে মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে এসেছে কলার দাম! কলার দাম শুনে আমজনতার ঘাম বের হচ্ছে। কপালে থাকে চিন্তার ভাঁজ, এবার ৩ রোজার ব্যয়েই না সারা মাসের বাজেট শেষ হয়ে যায়। যেহেতু রোজার সময় ধর্মপ্রিয় মুসলমানেরা সেহেরিতে দুধ ও কলা দিয়ে ভাত খেয়ে রোজা থাকে। কিন্তু কলার দাম অতিরিক্ত বৃদ্ধির কারণে রোজাদার ব্যাক্তিরা হিমসিম খাচ্ছে কলা ক্রয় করতে গিয়ে।
শুক্রবার ও শনিবার দু,দির কালীগঞ্জ বাজার ও বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেছে,আকার ভেদে চাম্পা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ২৪ থেকে ৩২ টাকা, সফরি কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা। সাগর কলা ৪০ থেকে ৬০ টাকা হালি, ঠোটে কলা ৪০ থেকে ৪৮ টাকা হাীল বিক্রি হচ্ছে। যদিও রোজার ৪/৫ দিন আগেও এই চাম্পা কলার দাম ছিলো ১০-২০ টাকা, ও সফরি কলার দাম ছিলো ১৫-২৫ টাকা। কলা কিনতে আসা মোহিদুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা আক্ষেপের সাথে জানান, ‘ইফতার শেষে বা সেহেরির সময় দুধ ভাতের সাথে কলা মুসলমানদের প্রিয় খাবার। অথচ আজ কলা কিনতে এসে শরীর ঘামছে। এ ভাবে কলার দাম বেশি হলে কিভাবে কলা কিনবো।
রোজার আসতেই কলার দাম ডিগবাজি খেয়ে বেড়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে কালীগঞ্জ মেইন বাসষ্টান্ডের ব্যবসায়ী রোকন মিয়া, নিশিত ঘোষ, রনজিত ভৌমিক বলেন, আমরা খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ী। আড়ত থেকে কিনে এনে সামান্য মুনাফা ধরে ক্রেতার নিকট বিক্রয় করি। যেহেতু আমরা আড়ত থেকে বেশি দামে কলা কিনে এনেছি, সেহেতু বেশি দামে বিক্রয় করা ছাড়া আমাদের উপায় নেই। খুচরা ব্যবসায়িরা বলছেন এবার কলার দাম বেশি হলে ও ক্রেতাদের চাহিদা অন্যবছরের চেয়ে একটু বেশি। রোজার আগে এক কান্দি কলা যে দামে আমরা ক্রয় করে আনতাম এখন তেমন এক কান্দি কলা ৪০০/৪৫০ টাকা বেশি দামে ক্রয় করে আনছি। যদিও কলার বাজার এমন অস্থিতিশীল হওয়ার কোন কারণ নেই। সব আড়ৎদারদের কারসাজি।এই সুযোগে অসাধু আড়ৎদাররা জিম্মি করে আমজনতার পকেট কেটে তাদের আরাম আয়াশের পথ সুগম করছে। যা সত্যিই আমাদের জাতির জন্য লজ্জাজনক। রমজান মাস মানেই এবাদতের মাস। রমজান মাস মানেই সংযমের মাস। রমজান মাস মানেই রহমত, বরকত ও নাজাতের মাস। পবিত্র ও মহিমান্বিত মাস। কিন্তু বাঙালির ইতিহাসে এ মাসেই অধিকাংশ ব্যবসায়ী সাধারণ মানুষদের লুঠে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। কালীগঞ্জে পাকা কলার দাম এভাবে মারাত্নক হারে বৃদ্ধি পেলে ও প্রশাসনিক ভাবে প্রয়োজনিয় কোন ব্যবস্থা গ্রহন করছে না।