বিভিন্ন জাতীয় দিবসে বঙ্গবন্ধুর অস্থায়ী ম্যুরালে শ্রদ্ধাসহ পুস্পস্তবক অর্পণ করা হলেও স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও কুড়িগ্রামে গড়ে ওঠেনি বঙ্গবন্ধুর সার্বজনীন ও স্থায়ী ম্যুরাল। তবে সর্ব সাধারণের জন্য জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবারে তৈরি হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর একটি স্থায়ী ম্যুরাল।
সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালী,স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ ই মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণ, ১৭ ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও ১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালনের জন্য প্রতিবছর স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে শহরের বিজয় স্তম্ভে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি হিসেবে জাতির জনকের অস্থায়ী ছবিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে দিন শেষে সেখানে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য বিজয়স্তম্ভ থেকে সেই অস্থায়ী ছবি ও পুস্পস্তবকগুলো সরিয়ে নেয়া হয়। জেলার নির্দিষ্ট কোনো স্থানে সকল মানুষের জন্য আলাদা কোনো ম্যূরাল বা ভাস্কর্য না থাকার ফলে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিবসগুলোতে বিজয় স্তম্ভে অস্থায়ীভাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সর্বসাধারণ এভাবেই শ্রদ্ধা জানায়।
দীর্ঘ বছরের পর বছর এভাবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও শাহাদতবার্ষিকীর মতো গুরুত্বপূর্ণ দুটি দিবসও পালন করা হয়। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর ম্যূরাল বা ভাস্কর্য গড়ে ওঠা নিয়ে তেমন কোন উদ্যোগ গ্রহন করা হয়নি। যদিও দু’বছর আগে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালনের সময় এ বিষয়ে জেলার সংস্কৃতি কর্মীরা স্থায়ী ম্যুরাল নির্মাণের দাবী তুলেছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে কেউ কোনো কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেন নি।
অন্যদিকে কুড়িগ্রাম জেলা শহরের ত্রিমোহনীতে, জেলা পরিষদ চত্বরে, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে স্ব স্ব কর্তৃপক্ষ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল তৈরি করলেও জেলায় নেই তার কোন স্থায়ী ও সর্বজনীন ভাস্কর্য।
কুড়িগ্রাম জেলার ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী দুলাল বোস বলেন, 'দেশ স্বাধীন হবার এতগুলো বছর পরেও জেলায় কেন্দ্রীয়ভাবে জাতির জনকের ম্যুরাল না থাকার বিষয়টি সত্যি কষ্টদায়ক। স্বাধীনতার মাসে প্রশাসন চাইলেই এ সমস্যাটির সমাধান করতে পারে।'
জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ রাশেদুজ্জামান বাবু বলেন,‘বিষয়টি দুঃখজনক হলেও সত্যি। কুড়িগ্রামে কেন্দ্রীয়ভাবে সর্বজনীন এরকম কোনো কিছু ম্যূরাল বা ভাস্কর্য বঙ্গবন্ধুর নাই। আমি এই বিষয়টি আগামী জেলা উন্নয়ন সভার মিটিং এ তুলে ধরবো। যাতে সবাই মিলে এক জায়গায় বাংলাদেশের স্থপতির প্রতি আমরা সম্মান প্রর্দশন করতে পারি।'
এ বিষয়ে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, ‘এতদিন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে জেলার নিজস্ব ম্যুরাল বা ভাস্কর্য তৈরির বিষয়টি নিয়ে কাজ করা হয়নি। বিষয়টি সত্যি দুঃখজনক। আমরা আমাদের ডিসি অফিসের পুকুরটি সংলগ্ন আই লাভ কুড়িগ্রাম নামক স্থানে জেলার একটি নিজস্ব জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল বা ভাস্কর্য যতো দ্রুত সম্ভব তৈরির উদ্যোগ নেয়া হবে। আগামী আগস্ট মাসের মধ্যে তা তৈরি করা সম্ভবপর হবে বলে আশাকরি।’