রমজানের শুরু থেকেই নেছারাবাদসহ পিরোজপুরের ৭ উপজেলায় দফায় দফায় বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। গত ১০ দিনের মধ্যে মধ্যে লাগামহীন ভাবে বেড়েছে বেগুন, মরিচ, শসা ও লেবু খেজুর, মাছ-মাংস সহ সব ধরণের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। আগের বাড়তি দামেই ক্রয়তাদের নিত্যপণ্য ক্রয়াক্ষমতা অনেকটা হারিয়ে ফেললেও আবার গত ১০ দিনের ব্যবধানে কেজিতে পেঁয়াজ,ছোলা, তেল ও চিনির দাম বেড়ে যাওয়ায় রমজানে সীমিত আয়ের মানুষর মানবতার জীবণ যাপনের মধ্য রমজান মাস পার করছেন। পিরোজপুরের বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে। নেছারাবাদের পাইকারি বিক্রেতারা জানান, বাজারে পণ্যের দর বাড়ার কারণে খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। খাদ্যপণ্যের বাজার অস্থিরের কারণে স্বস্তিতে নেই ক্রেতারা। তবে রসালো ও তৃপ্তিময় তরমুজের দাম গত বছরের চেয়ে কম হওয়ায় প্রতি ঘরে-ঘরে ইফতারির জন্য তরমুজ প্রধান উপকরণ। বৃহাঃপতিবার কাঁচাবাজার ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার কোনোভাবেই স্বস্তিতে নেই। দিশাহারা হয়ে পড়ছে নিম্ম ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ। রমজান মাসে যেসব পণ্যের চাহিদা বেশী সেই সব পণ্যেরই উর্ধ্বমুখী ক্রয়া মূল্য হওয়ায় সাধারণ মানুষ চরমভাবে বিপাকে পড়েছে। অন্যদিকে মাচ, মাংসের কেজি প্রতি দাম বেড়েছে সাধারন মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। এ ছাড়া সব ধরণের সবজি¦ আগের চেয়ে দাম উর্ধ্বমুখী। মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো পড়ছে বেকাদায়। বিশেষ করে ছোলা, মসুর ডাল, বুট, বেগুন ও পেয়াজের মূল্য চওড়া। রোজার শুরুতেই নেছারাবাদসহ বিভিন্ন থানা-উপজেলা ও সদর ঘুরে বাজার মূল্যের যে চিত্র পাওয়া গেছে তা হচ্ছে- ভারতীয় প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩৫-৪০ টাকা এবং দেশীয় পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৪৩ থেকে ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রমজান মাসের অন্যতম উপকরণ ছোলা বুট প্রতি কেজি ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, মশুরি ডাল প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১০৫, হলেও খেশুরি ডাল প্রতি কেজি ৮০ থেকে ৮৫টাকা, চিনি ১০০ থেকে বেড়ে ১১৫ টাকা, মুগ ডাল ১০০ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। রমজানের অনুষঙ্গ বেগুন প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা যা রমজানের শুরু হওয়ার আগে ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। তবে গত বছর রমজানে প্রতিকেজি টমেটো ৬০ থেকে ৭০ টাকা মূল্য থাকলেও এ বছর ২৫ থেকে ৩০ টাকা, কাঁচামরিচের ১২০ থেকে ১৩০ প্রতিকেজি, গত বছরের চেয়ে কেজিপ্রতি ৬০ টাকা বেড়েছে, বাতাবি লেবু প্রতি হালি প্রকারভেদে ২০-৩০ টাকা থেকে বর্তমান ৫০-৭০ টাকা যা হালি বেড়েছে প্রায় ৫০ টাকা, শষা ৩০ থেকে ৪০ এবং হাইব্রিড শসা ৪৫-৫৫ টাকা প্রতিকেজি। প্রতিকেজি পঠোল ৪০-৪৫ টাকা, সিম ৮০-৯০ টাকা, প্রতিকেজি ঝিঙে ৬০ টাকা, চিচিঙা ৫৫-৬০ টাকা, কাচাপেঁপে ৪০-৪৩ টাকা, ঢ়েঁড়সের কেজি ছিল ৪০ টাকা, লাল ও সবুজশাক, পালং শাক, কচুরলতি, লাউ, ও লাউশাক বরবটি কেজি, পুই ও ডাঁটা শাক প্রকারভেদে সব ধরনের তরিতরকারি ও শাক-সবজি¦ রমজানের শুরু থেকেই গত বছরের চেয়ে দাম প্রায় দ্বিগুন। অন্যাদিকে মাছ-মাংসের দামও ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। প্রতিকেজি গরুর মাংস ৭৭৫-৮০০ খাসির মাংস ১০০-১১০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৯০ টাকা, প্রতি লেয়ার ৩১০ থেকে ৩২০ টাকা,কক মুরগি ৩২০-৩২৫ টাকা, দেশী মুরগী ৬৫০-৭০০ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে যা গত রমজানের এর দাম ছিল অর্ধেকের কম। ফার্মের লাল ডিম প্রতি হালি ৪০ টাকা এবং দেশী মুরগীর ডিম ৪৫-৫০ টাকা ও হাঁসের ডিম ৪২ টাকা দরে প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে। বরিশাল সদরসহ বিভিন্ন উপজেলার খুচরা মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব ধরনের মাছের দাম কেজিতে ৫০ থেকে ১৫০ বেড়েছে। প্রতি কেজি রুই দেশী ৩৫০-৪০০ টাকা, কাতলা ৪৫০-৫০০ টাকা, তেলাপিয়া ৩০০-৩৫০,সিলভার কার্প ২৮০- ৩০০টাকা, আইড় ৬৫০-৮০০ টাকা, গলদা চিংড়ি আকারভেদে ৯০০-১১০০ টাকা, পুঁটি ২৬০-৩৩০ টাকা, মলা ৪০০ টাকা, বোয়াল ৫৫০-৬৫০ টাকা,শিং আকারভেদে ৮০০-১২০০ টাকা, দেশী মাগুর ১০৩০-১২০০ টাকা শোল মাছ ৬০০-৭০০ টাকা, চাষের পাঙ্গাস ১৮০-২২০ টাকা, চাষের কৈ ২৩০-২৮০ টাকা, ৯০০ গ্রামের ইলিশ মাছ ১৪০০-১৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সদরে খোলাবাজারে লিটারপ্রতি বোটলজাত তেল বিক্রি হচ্ছে ৯৬-১০০ টাকায়। আবার রমজানের ইফতারীর প্রধান খাদ্য উপাদান খেজুর বড়টা খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ১৮০-২০০ টাকা, ডাব্বাস খেজুর ২০০-২২০, পরিদা লাল খেজুর ২৩০-২৫০, সাদা ২৭০-২৮০, তিউনিসিয়ার খেজুর ২৫০-১২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বরিশাল সদরের কাটপটিÍ বাজারে আসা এক ক্রেতা হারুন অর রশিদ বলেন, প্রতি বছরই রমজান মাসে মাছ,মাংস সবজিসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে যায়। যা সরকারের নিয়ন্ত্রনের বাইরে থাকে এবং এ বাজার দরের জন্য ব্যবসায়ী মহলের একটি সিন্টিকেট চক্র দায়ী। এবারো তাই হয়েছে। সরকারের নিয়ন্ত্রণহীন বাজার ব্যবস্থাপনার কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দাম সাধারণের ক্রয়তার হাতের নাগালের বাইরে চলে গেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তার পরেও নিম্মা-আয়ের মানূষ অতিকষ্টে সিয়ামের মাস পালন করছেন।