নওগাঁর মহাদেবপুরে প্রকাশ্য দিবালোকে বাড়িঘরে হামলা করে মারপিট, ভাংচুর ও লুটপাট মামলার সাজা থেকে বাঁচতে আসামীদের বিরুদ্ধে জোড়পূর্বক স্বাক্ষর সংগ্রহের অভিযোগ করা হয়েছে। সম্প্রতি নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার হাতুড় ইউনিয়নের মুখইর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
ওইগ্রামের হাজী আবদুল মজিদের ছেলে সাইদুর রহমান অভিযোগ করেন যে, তার প্রতিবেসী আবদুস সালাম সরদারের ছেলে এরশাদুল সরদারের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে গত ২০১৯ সালের ২১ এপ্রিল সকালে এরশাদুল ও তার সঙ্গীরা হাতে লোহার রড, হাসুয়া, রামদা, হাতুড়ি ও লাঠিসোঠা নিয়ে সাইদুরের বাড়িতে চড়াও হয়ে লোহার মেইন গেট ভেঙ্গে ভিতরে ঢোকে। তারা সাইদুরের স্ত্রী আমেনা বেগমকে বেদম মারপিট করে বিদেশে থাকা তার ছেলের পাঠানো নগদ তিন লক্ষ টাকা, স্বর্ণালংকার ও অন্যান্য মালামাল লুট করে নিয়ে পালিয়ে যায়। সাইদুর রহমান এ ব্যাপারে সেবছর ২৩ এপ্রিল মহাদেবপুর থানায় প্রতিপক্ষ এরশাদুল, সাদ্দাম হোসেন সবুজ, কাউসার আলী, নুর নবী, ইয়াছিন আলী ও অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করলে মহাদেবপুর থানার এসআই আবু রায়হান সেবছর ১২ জুন তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানী শেষে আদালত আগামী ১০ এপ্রিল মামলাটির রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন। রায়ে অভিযুক্তদের সাজা হবার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে বলে সাইদুর রহমান জানান। কিন্তু মামলার সাজা থেকে বাঁচতে এরশাদুল গত ৩১ মার্চ সকালে ওইগ্রামে একটি শালিস বৈঠকের আয়োজন করে। শালিসে দাবি করা হয় যে, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সাইদুর রহমান ও এরশাদুল উভয়ে উভয়ের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করেছেন। তাদের কারোর মামলাই শতভাগ সঠিক নয়। সুতরাং মামলাগুলো প্রত্যাহার করার ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু এরশাদুল শুধুমাত্র তাদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহারের জন্য গ্রামবাসী ও বাদি সাইদুর রহমানের স্বাক্ষর সংগ্রহের চেষ্টা করে। এতে গ্রামবাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে বচসায় লিপ্ত হয়। ফলে বৈঠক ভন্ডুল হয়ে যায়। কিন্তু এরশাদুল গ্রামবাসীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বাক্ষর সংগ্রহ অব্যাহত রাখে। জানতে চাইলে এরশাদুল সরদার জানান, গ্রামের বেশিরভাগ মানুষেরই স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয়েছে। আদালতে চলমান মামলার বিষয়ে এধরনের স্বাক্ষর সংগ্রহ আইনের বরখেলাপ কিনা তা তিনি জানাতে পারেননি।