বরগুনার বামনা উপজেলার কলেজ সড়কের ইসলামীয়া ক্লিনিক এ- ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রসূতি এক রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ওই প্রসুতির নাম মোসা. মোর্শ্বেদা বেগম(২৮)। সে উপজেলার সোনাখালী গ্রামের মোস্তফা গাজীর মেয়ে। মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) ভোরে গুরুতর অসুস্থ প্রসুতিকে বরিশালে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অন্তরা হালদার ওই ক্লিনিকটিতে ভর্তিকৃত সকল রোগীকে বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থানান্তর করে ক্লিনিকটি সিলাগালা করে দেয়। তবে প্রসুতী মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের পক্ষে বামনা থানায় এখন পর্যন্ত কোন মামলা বা অভিযোগ দায়ের করেনি।
প্রসূতির পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, গত ১০ এপ্রিল বিকাল ৪টায় ওই প্রসুতিকে অস্ত্রপচার করার জন্য ইসলামীয়া ক্লিনিক এ- ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করানো হয়। পরে বিকাল ৫ টায় ডা. রাকিবুর রহমান নামে একজন চিকিৎসক তার অস্ত্রপাচার করেন। প্রসুতি একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। সন্তান জন্মের পরে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বজনরা ওই চিকিৎসক কে জানান। চিকিৎসক তাদের মঠবাড়িয়ায় তার চেম্বারে নিয়ে আসতে বলেন। সেখানে রোগীর স্বজনরা রোগীকে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজে পাঠায়। বরিশাল যাওয়ার পথে ভান্ডারিয়া এলাকায় পৌছালে ওই প্রসুতি রোগীর মারা যায়। পরে তাকে ভান্ডারিয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানের চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষনা করেন। স্বজনরা তার মরদেহ পুনরায় বামনার ক্লিনিকটিতে নিয়ে আসলে বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে পুলিশ এসে মরদেহ ময়নাতদন্তর জন্য থানায় নিয়ে আসেন।
প্রসূতির স্বামী নাসির উদ্দিন বলেন, আমার স্ত্রীর প্রসব বেদনা উঠলে তাকে নিয়ে ক্লিনিকটিতে আসি। সেখানে চিকিৎসক রাকিবুর রহমান এর কাছে রোগীর অবস্থা জানাই। তাকে জানাই এর পূর্বেও তার সিজার হয়েছিলো। চিকিৎসক জানায় কোন সমস্যা নেই। সে অপারেশন করেন এবং একটি কন্যাসন্তান জন্ম নেয়। তবে রোগী অসুস্থ হয়ে পড়লে ওই চিকিৎসককে বারবার অবহিত করার চেষ্টা করা হলেও তিনি দূড়ে রয়েছেন বলে জানান। পরে তিনি রোগী নিয়ে মঠবাড়িয়া যেতে বলেন। আমরা ওই রাতে তার কাছে রোগী নিয়ে যাই। চিকিৎসকের অবহেলায় আমার স্ত্রী মারা গেছে।
বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মনিরুজ্জামান বলেন, রোগী মৃত্যুর ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত টীম গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও ক্লিনিকটি সিলগালা করা হয়েছে। বামনা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মাঈনুল হোসেন বলেন, আমরা রোগী মৃত্যুর ঘটনায় আপাতত একটি অপমৃত্যু মামলা নেওয়া হয়েছে। রোগীর স্বজনের পক্ষে এখন পর্যন্ত থানায় কোন অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অন্তরা হালদার বলেন, আমি খবর পেয়ে ওই ক্লিনিকটি পরিদর্শন করেছি। পরে ভর্তিকৃত সকল রোগী সরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় এবং ক্লিনিকটি সিলাগালা করা হয়।