ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে ‘কুচনী গণহত্যা দিবস’ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করেছেন উপজেলা প্রশাসন। গতকাল ২০ এপ্রিল দুপুরে নোয়াগাঁও ইউনিয়নের কুচনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন গণহত্যার জায়গায় ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীন।১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে গ্রামের সংখ্যালঘু পরিবারের ৫ জন পুরূষ ও ৪ জন মহিলাকে বাড়ি থেকে ওঠিয়ে নিয়ে এই স্থানটিতে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল পাকবাহিনী। লাশ গুলোকে সেখানেই মাটি চাপা দিয়েছিলেন কয়েকজন গ্রামবাসী। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম সেখানে গণহত্যা দিবস পালন করেন উপজেলা প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল দিবসটি পালন উপলক্ষে সেখানে পুস্ফস্তবক অর্পণ করে ৯ শহিদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান ইউএনও। দ্রƒততম সময়ের মধ্যে স্থানটিতে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করার ঘোষণা দিয়েছেন নির্বাহী কর্মকর্তা। শ্রদ্ধা জানিয়েছেন শহিদদের স্বজনরাও। পরে ইউএনও’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সভায় বক্তব্য রাখেন- বক্তব্য রাখেন সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. ইসমত আলী, ইউপি চেয়ারম্যান মো. মনসুর আহমেদ, আ.লীগ নেতা ও মহিলা কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো. মাহফুজ আলী, সরাইল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুব খান, সাংবাদিক সোহরাব শান্ত ও শেখ মো. সিরাজুল ইসলাম। বক্তারা বলেন, গণহত্যা ঘৃণিত ও কাপুরূষচিত কাজ। বয়স্ক লোকদের নির্মমভাবে হত্যা করে মনের আক্রোশ মিটিয়েছে কুলাঙ্গাররা। জঘন্য কাজের সাথে জড়িত স্থানীয় রাজাকার আলবদর পাকবাহিনীর দোসরদের প্রতি ঘৃণা ও ধিক্কার জানাই। শহিদদের স্বজনদের এখন থেকে জাতীয় দিবসে উপজেলা সদরে এনে অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে সংবর্ধনা ও সম্মান দেয়ার প্রস্তাব করা হয়।
প্রসঙ্গত: কুচনী বধ্যভূমিতে শহিদ ৯ জন হলেন- জগৎ মোহন দাস (৭০), কৈশল্য রানী দাস (৬৫), সচীনন্দন দাস (৬৫), প্রহলাদ দাস (৫৫), তারিনী দাস (৭১), বৈকন্ঠ দাস (৮০), মহেশ্বরী দাস (৭৫), বিধু রানী দাস (৫৫) ও মুক্তলতা দাস (৭০)।