নাটোরের বড়াইগ্রামে ছয় মাসের বকেয়া ভাতা ও ঈদ বোনাস পাননি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ঈদের আগে বকেয়া অর্থসহ বোনাস দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু একেবারে শেষ মুহুর্তে এসেও ভাতা ও বোনাস কোনটাই না পেয়ে শুন্য হাতেই বিশেষ দিনটি কেটেছে তাদের। এতে এসব পরিবারে ছিল না ঈদের আমেজ। পরিবার-পরিজন নিয়ে একপ্রকার নিরানন্দ ঈদ উদযাপন করেছেন তারা।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন সুত্রে জানা যায়, উপজেলায় মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় মোট ১৫৪ টি কেন্দ্রে ১৫৪ জন নারী ও পুরুষ শিক্ষক পাঠদান করেন। প্রতি মাসে তারা মাত্র ৫ হাজার টাকা সম্মানী ভাতা পান। কিন্তু গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে ছয় মাসের ভাতা বকেয়া পড়েছে তাদের। এ ছাড়া প্রতি ঈদে ভাতার সমপরিমাণ ঈদ বোনাস পান তারা। কিন্তু এবার তাও পাননি। ঈদের আগমূহুর্ত পর্যন্ত বকেয়া ভাতা ও বোনাস পাওয়ার প্রতীক্ষায় ছিলেন এসব শিক্ষকেরা। কিন্তু শেষ মুহুর্তেও ভাতা বা বোনাস কোনটাই না পেয়ে নতুন জামাকাপড়সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে পারেননি তারা। এতে অর্থাভাবে এসব পরিবারের ঈদের আনন্দ বিলীন হয়ে গেছে।
ভরতপুর এলাকার শিক্ষক মোঃ শামসুজ্জামান বলেন, ঊর্ধ্বতন স্যারেরা আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, ঈদের আগে সব টাকা এক সাথে দেবেন। কিন্তু তাও দেননি। হাতে টাকা-পয়সা না থাকলে ছেলেমেয়েদের নিয়ে ঈদ উদযাপন যে কতটা কষ্টদায়ক, এটা যদি কর্তৃপক্ষ বুঝতেন তাহলে আমাদের কথাটাও একটু ভাবতেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, ছয় মাস ধরে ভাতা পাই না। ঈদে নতুন জামা কাপড়ের বায়না ধরেছিল ছেলেমেয়েরা। কিন্তু হাতে টাকা না থাকায় কোন জামা কাপড় কিনতে পারিনি। ঈদের দিনেও তাদেরকে ভাল-মন্দ খাওয়ানোর সৌভাগ্য হয়নি আমাদের। বড়াইগ্রাম এলাকার শিক্ষক মোঃ আজাদুল ইকবাল বাতেন বলেন, মাস শেষে সম্মানী ভাতা পাই মাত্র ৫ হাজার টাকা। সেটাও ৬ মাস ধরে বন্ধ। খুব আশায় ছিলাম যে, বকেয়া সম্মানীসহ বোনাসটা ঈদের আগে পাবো, কিন্তু পেলাম না। ঈদের আগে কমপক্ষে বোনাসটা দিলেও শিক্ষকরা একটু কেনাকাটা করতে পারতেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বড়াইগ্রাম উপজেলা সুপার ভাইজার মহিদুল ইসলাম জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেছি, প্রত্যয়ন পত্র দিতে বলেছিলেন তাও দিয়েছি। তারা ঈদের আগে বোনাসসহ সম্মানী ভাতা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর কিছুই হলো না।