যৌতুকের দাবিতে এক মাদকাসক্ত স্বামী তার দুই সন্তানের জননী স্ত্রীকে মারপিট করে একবস্ত্রে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত অবস্থায় ওই গৃহবধুকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার নাজমুন্নাহার বাদি হয়ে স্বামী বোরহানুজ্জামান মিঠুনসহ ৩ জনের নামে কেশবপুর থানায় অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর উপজেলার বরনডালি গ্রামের কৃষক রুহুল কুদ্দুসের মেয়ে নাজমুন্নাহারের সাথে সাতবাড়িয়া গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে বোরহানুজ্জামান মিঠুনের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নগদ টাকাসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল দেয়া হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের ঘরে তাসকিয়া (৪) ও তাসরিফ (১৮ মাস) নামের দুটি সন্তান জন্ম নেয়। বিয়ের পর থেকে তার শ্বশুর মতিয়ার রহমান ও শাশুড়ি রায়হেনা নাজনিন হেনার কুপরামর্শে বিভিন্ন সময়ে আরও ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে বিভিন্ন সময়ে তার ওপর শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন চালাতো। এনিয়ে সংসারে অশান্তি লেগেই ছিল। এরই জের ধরে গত ১৮ এপ্রিল বিকেলে বোরহানুজ্জামান ও শাশুড়ি রায়হেনা নাজনিন হেনা লাঠিসোটা দিয়ে নাজমুন্নাহারকে এলোপাতাড়িভাবে মারপিটসহ দুটি সন্তানকে কেড়ে নিয়ে একবস্ত্রে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে গেটে তালা লাগিয়ে দেয়। খবর পেয়ে তার বাবা মেয়েকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
নাজমুন্নাহার অভিযোগ করে বলেন, তার সাথে বিয়ের আগে থেকে বোরহানুজ্জামান মিঠুন মাদকাসক্ত ছিল। যে কারণে তার ১ম স্ত্রীও তার ঘর করতে পারেনি। সে এ বিয়ে গোপণ করে আমাকে বিয়ে করে। নেশার টাকার জন্যে সে আমার ওপর অত্যাচার নির্যাতন করলেও দুটি সন্তানের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে সব সহ্য করেছি। গত ১ সপ্তাহ ধরে আমি ও আমার বাবা বিচারের আশায় সাতবাড়িয়া গ্রামের বিভিন্ন মানুষের দারে দারে ঘুরছি। বিচার না পেয়ে অবশেষে গত ২৫ এপ্রিল আমি বাদি হয়ে স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়িকে আসামি করে কেশবপুর থানায় অভিযোগ করেছি।
এ ব্যাপারে থানার ডিউটি অফিসার এসআই মিজানুর রহমান বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে ভালুকঘর ফাড়ি ইনচার্জ ইব্রাহিম হোসেনকে বলা হয়েছে। ভালুকঘর ফাড়ি ইনচার্জ ইব্রাহিম হোসেন জানান, আমি বিষয়টি নিরসনের জন্যে ইতোপূর্বে ২ বার মিঠুনের বাড়িতে গিয়েছি। যাতে শান্তিপূর্ণ মিমাংশা হয় সে চেষ্টাই করা হবে।