পটুয়াখালীর বাউফলে রাতের আঁধারে উপজেলা আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ের (জনতা ভবন) প্রধান ফটকের সামনের সাইনবোর্ড খুলে ফেলেছেন দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার রাত আনুমানিক ৪টার দিকে পৌর শহরের টি.এন.টি রোডস্থ উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। ওই সাইনবোর্ড খুলে ফেলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ঘটনাস্থলের কাছ থেকে কেউ একজন মোবাইল ফোনে ওই ভিডিও ধারন করেন।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, চারজন ব্যক্তি একটি মই নিয়ে জনতা ভবনের (আওয়ামী লীগ কার্যালয়) প্রধান ফটকের সামনে টাঙানো ‘আওয়ামী লীগ কার্যালয়, জনতা ভবন, বাউফল পটুয়াখালী’ লেখা সম্বলিত সাইনবোর্ড খুলে ফেলেন। কার্যালয়ের সামনে থেকে কেউ একজন ‘ডাক-চিৎকার’ দিলে ওই চার দুর্বৃত্ত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী পৌর সভার কাউন্সিলর মো. মামুন আকন বলেন, কিছু লোক আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সাইনবোর্ড খুলে ফেলছেন এমন সংবাদ জনৈক এক ব্যক্তি মোবাইল ফোনের ক্ষুদে বার্তায় আমাকে জানায়। এমন সংবাদ পেয়ে আমি বাসা থেকে বের হয়ে জনতা ভবনের সামনের সড়কে আসি। এসে দেখি চারজন মুখোশধারী ব্যক্তি ‘আওয়ামী লীগ কার্যালয়, জনতা ভবন, বাউফল পটুয়াখালী’ সাইনবোর্ড ছিড়ে ফেলেন। পরে একটি মই (চঙ্গা) দিয়ে শুধু জনতা ভবন লেখা সাইনবোর্ড লাখানোর চেষ্টা করেন। তখন আমার উপস্থিতি টের পেয়ে দুর্বৃত্তরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। তখন মই (চঙ্গা) ও জনতা ভবন লেখা ব্যানার ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় আগের সাইনবোর্ড সাথে করে নিয়ে যায়।
দলীয় সূত্র বলছে, গত ২৬ এপ্্িরল দুপুরে পৌরশহরের পাবলিক মাঠে এক প্রতিবাদ সভায় বাউফল পৌর মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল ‘জনতা ভবন আওয়ামী লীগ কার্যালয় লেখা নেই’ বলে বক্তব্য দেন। এ বক্তব্যের প্রতিবাদে ২৭ এপ্্িরল স্থানীয় এমপি আ.স.ম ফিরোজ পূত্র ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য রায়হান সাকিব তার নিজস্ব ফেসবুক পেইজে জনতা ভবনের সামনে আওয়ামী লীগ কার্যালয় লেখা একটি ছবি ও বক্তব্যের ভিডিও পোস্ট করে স্টাটাস দেন। তিনি তার পোস্টে লিখেন,‘ পৌর মেয়র পাবলিক মাঠে দেয়া বক্তব্যে ভুল তথ্য দিয়েছেন। ছবিতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে জনতা ভবন লেখার উপরে অংশে‘আওয়ামী লীগ কার্যালয়, বাউফল, পটুয়াখালী’ লেখা আছে এবং অফিসের সামনের দু পাশে সেচ্ছাসেবকলীগ, শ্রমিক লীগ ও মটর চালক লীগের সাইন বোর্ড দেয়া আছে।
এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি, স্থানীয় সাংসদ ও সাবেক চিপহুইপ আ.স.ম ফিরোজ এমপি বলেন“ আওয়ামী লীগের সাইনবোর্ড আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব, বাউফলে জনতা ভবন হচ্ছে আওয়ামী লীগের দির্ঘদিনের ঠিকানা, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রিয়নেত্রী শেখ হাসিনা প্রায়ই বলেন একটি গোষ্ঠী জাতীয় থেকে তৃনমুল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে করে আসছে, আমি মনে করি রাতের আঁধারে সাইনবোর্ডটি সরানোর অর্থ হচ্ছে আওয়ামী লীগের অস্তিত্বে আঘাত করা, বৃথাই বাউফল আওয়ামী লীগের ঠিকানা মুছে দেয়ার অপচেষ্টা এবং আওয়ামীলেিগর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা। ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্যেশ্য কখনো হাসিল হতে পারে না।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও বাউফল উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান মোসারেফ হোসেন খান বলেন,‘ ৭৯ সাল থেকে জনতা ভবন আওয়ামী লীগের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। দলীয় সকল কর্মসূচি জনতা ভবনে পালিত হয়ে আসছে। আওয়ামী লীগ নামধারী কিছু ব্যক্তি বিভিন্ন সময় জনতা ভবনকে প্রশ্নবৃদ্ধি করার চেষ্টা করছেন। যারা জনতা ভবনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে আসছে তারা রাতের আঁধারে সাইনবোর্ড ছিড়ে ফেলেছেন। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহন প্রক্রিয়াধীন আছে।ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এটিএম আরিচুল হক বলেন,‘ শুক্রবার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ভিডিও দেখে জড়িতদের সনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।