জেলার বাকেরগঞ্জ পৌর এলাকাসহ উপজেলার পাঁচটি সড়ক দীর্ঘদিন থেকে চলাচলে সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পরলেও বিষয়টি দেখার যেন কেউ নেই। এরমধ্যে দুইটি সড়ক উন্নয়নের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হলেও রহস্যজনক কারণে বিগত তিনবছরেও কাজের কোন অগ্রগতি হয়নি।
ফলে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে ওইসব এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ আরো কয়েকগুন বেড়ে যাবে বলে জানিয়েছেন ভূক্তভোগীরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দুধল ইউনিয়নের চরগোমা সড়ক এবং নলুয়া ইউনিয়নের নবানখালি বাজার হয়ে পুরাতন মল্লিকহাট পর্যন্ত সড়ক উন্নয়নের জন্য ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে বরিশাল নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় এলজিইডি থেকে দরপত্র আহবান করা হয়। পরবর্তীতে টেন্ডারের মাধ্যমে বিজেপি প্রকল্পে ১ কোটি ৪৯ লাখ ৫৫ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়কের কার্যাদেশ পায় মেসার্স লায়লা বিল্ডার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
সূত্রমতে, ২০২০ সালে গোমা কৃষ্ণকাঠি গ্রামের কেজিএস উচ্চমাধ্যমিকবিদ্যালয় থেকে গাজীরহাট চরগোমা খেয়া ঘাট পর্যন্ত সড়কের প্রায় দুই কিলোমিটার অংশে বালু ভরাট করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এরপর বিগত তিন বছর পেরিয়ে গেলেও জনগুরুত্বপূর্ন ওই সড়কের নির্মাণ কাজতো দূরের কথা কোন খোঁজ পর্যন্ত রাখেনি ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ফলে ওই সড়কের ওপর নির্ভরশীল দুধল ইউনিয়নের প্রায় ছয়টি গ্রামের বাসিন্দাসহ স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের বালুর ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে। বন্ধ রয়েছে সবধরনের যানবাহন চলাচল। এ ছাড়া নলুয়া ইউনিয়নের নবানখালি বাজার হয়ে পুরাতন মল্লিকহাট সড়কটির টেন্ডার পেলেও মেসার্স লায়লা বিল্ডার্স নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বিগত পাঁচ বছরেও সড়কটির কাজ শুরু করেনি।
তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বাকেরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আবুল খায়ের মিয়া বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কার্যাদেশ বাতিল চেয়ে ইতোমধ্যে তিনবার জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে আবেদন করেছি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বরিশাল কাউয়ার চর হয়ে আন্তঃজেলা সড়কটি বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরামদ্দী, দুধল, কবাই, নলুয়াসহ কয়েকটি ইউনিয়নের ওপর দিয়ে দুমকী উপজেলা হয়ে পটুয়াখালী জেলার সাথে সংযোগ হয়েছে। কবাই লঞ্চঘাট সংলগ্ন আন্তঃজেলা সড়কটির পান্ডব নদীর পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বিশাল অংশে অব্যাহত ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বর্ষা মৌসুমের আগে সড়কটি সংস্কার করা না হলে সবধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী মাসুদ মাহমুদ সুমন বলেন, পান্ডব নদীর ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা না হলে সড়কটি সংস্কার করলেও কোন সুফল আসবে না। বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিব হোসেন বলেন, সড়ক ও জনপথ থেকে আমাদের লিখিত ও মৌখিকভাবে বিষয়টি জানানো হয়নি। আমাদের কাছে যেকোনো সহযোগিতা চাইলে আমরা তাদের সহযোগিতা করবো।
এছাড়াও বাকেরগঞ্জ পৌর এলাকার সাহেবগঞ্জ বাজার সড়কটি কয়েক যুগেও সংস্কার না করায় বেহাল দশায় পরিনত হয়েছে। অপরদিকে পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের মোল্লা বাড়ি থেকে আঠারোগাছিয়া ইটসলিংয়ের সড়কটি এক যুগ পর্যন্ত সংস্কারের অভাবে এখন কাঁচা রাস্তায় পরিণত হয়েছে।