ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কামারখালী ইউনিয়নে মধুমতি নদীর চরের দয়ারামপুর ও জারজরনগর খেওয়াঘাট এলাকায় রাতের আঁধারে চুরি করে বালি কাটার মহোৎসব চলছে। এ কারণে ঝুঁকিতে রয়েছে এই দুই গ্রামের বসতিরা আর বঞ্চিত হচ্ছে কৃষকরা। গ্রামের রাস্তাার উপর দিয়ে রাতের বেলায় পাঁচ চাকার বালিবাহী ট্রাকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ইউনিয়নের বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আঃ রউফ নামের রউফনগর সড়কটি। দিনের পর দিন কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায় এভাবে বালি লুট হলেও কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না তাদের। প্রতি রাতেই এসব ট্রাকে করে মধুমতি নদীর দুই ঘাটের বালি নিয়ে রউফনগর সড়ক হয়ে বিভিন্ন ভাটায় ও অন্যস্থানে বালি সরবরাহ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের।
সরেজমিনে মধুমতি নদীর দুই ঘাটে গেলে নাম গোপন রাখার শর্তে এলাকাবাসী জানান, স্থানীয় একটি ভূমিদস্যূ চক্র মধ্যরাতে ও ভোরে ফজরের নামাজের আযানের পর বেলচা দিয়ে বালি কেটে ট্রাকে করে বালু বিভিন্ন এলাকায় ও ইট ভাটায় বিক্রি করে। এই ভূমিদস্যূদের দলে রয়েছে দয়ারামপুর গ্রামের পলাশ বিশ্বাস ও আলমগীর শেখ। এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দয়ারামপুর আশ্রয়ণ প্রকল্প রক্ষা বাঁধের পাশে বালি কাটার কারণে ঝুঁকিতে রয়েছে দয়ারামপুর গ্রাম ও আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং জারজরনগর গ্রাম। বর্ষা মৌসুমে বাঁধ যে কোনো সময় ধ্বসে যেতে পারে। বাঁধের জিও ব্যাগ গুলো আলগা হয়ে যাবে। তবে ভূমিদস্যূরা ক্ষমতাশালী হওয়ায় তাদের ভয়ে এলাকার কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না।
এ ব্যাপারে ঘাটের বালি কাটার সাথে জড়িত রহিম শেখ, ইউসুফ শেখ ও আলম মৃধা বলেন, এলাকার পলাশ বিশ্বাস ও আলমগীর শেখ বালি কেটে বিক্রি করে। আমরা এর সাথে জড়িত না। আমরা দিন মুজুর হিসেবে কাজ করি। আর বালি কাটবো না। তাদের সাথে আলাপ করে জানা যায় পলাশ বিশ^াস ও আলমগীর শেখ বিনা পূজিঁতে মাসে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
বালু কাঁটার সাথে জড়িত চক্রের সদস্য পলাশ বিশ্বাসের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ওই এলাকায় চরে তাদের পৈত্রিক জমি রয়েছে। সেখান থেকে মাটি কাটছেন তিনি।
এ ব্যাপারে আলম এর সাথে যোগাযোগ করে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় তারা নদীর খাস ও জলাশয় জমি থেকে বালি কাটে তবে লোকের কাছে বলে নিজের জমি।
এ ব্যপারে মধুখালী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আশিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, দয়ারামপুর ও জারজরনগর চরে বালি কাটার ব্যাপারে ইতোমধ্যে অভিযোগ পেয়েছি। আমি এ ব্যাপারে খুব দ্রুতই ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করব এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। তবে বালি ও মাটি খেকোদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকবে।