আসন্ন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে চরমোনাই পীরের দল ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থীকে বরণ করে নিতে বড় আকারের শোডাউন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন দলের নেতাকর্মীরা। হাতপাখা মার্কার প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম আগামী ৮ মে ঢাকা থেকে সড়কপথে বরিশালে আসবেন। ওইদিন তাকে বিশাল মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা সহকারে বরণ করবেন দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। পরে তাকে দেওয়া হবে সংবর্ধনা। এজন্য ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। মূলত শুরুতেই চমক দেখাতে এ কৌশল নিয়েছে দলটি।
তবে সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতের সমর্থকদের অভিযোগ, দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে নৌকা প্রতীককে পরাজিত করতে পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগের একাংশের কতিপয় নেতার ইন্ধনে মুফতী ফয়জুল করীমকে বরিশালে মেয়র প্রার্থী করা হয়েছে। যদিও এ অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের নেতারা। অপরদিকে মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়া বর্তমান সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেছেন, খোকন সেরনিয়াবাতের চারপাশে থাকা সুবিধাবাদীরা আওয়ামী লীগের ঐক্যে ভাঙন ধরানোর জন্য এ ধরনের অপপ্রচার ছড়াচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিএনপি এবার নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়ার পর এবং আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে দলের ভেতরে চলমান দ্বন্ধ ও অবিশ্বাসের কারণে আগামী ১২ জুনের সিটি নির্বাচনে ইসলামি আন্দোলন মনোনীত ও জাপা মনোনীত প্রার্থী ভোটারদের কাছে আলাদা গুরুত্ব পাচ্ছে। সূত্রমতে, প্রার্থী হওয়ার আলোচনায় নাম না থাকলেও আকস্মিক ইসলামি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করার পর নগররীর বিভিন্ন মহলে চলছে নানা গুঞ্জন।
গত ১৮ এপ্রিল দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণার কথা থাকলেও ওইদিন দুপুরে আকস্মিকভাবে তা স্থগিত ঘোষণা করে ইসলামি আন্দোলন। ঈদের পাঁচ দিন পর গত ২৭ এপ্রিল মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীমকে দলীয় মেয়র প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা করেন দলের আমীর ও চরমোনাই পীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করিম। মনোনয়ন ঘোষণার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও দলটির প্রার্থী বা তার সমর্থকরা নগরীতে অদ্যবর্ধি নির্বাচন কেন্দ্রীক কোনো সভা বা কার্যক্রম পরিচালনা করেননি।
ইসলামী আন্দোলনের গণমাধ্যম শাখার দায়িত্বে থাকা ইসলামি যুব আন্দোলনের বরিশাল জেলা শাখার সভাপতি এইচএম সানাউল্লাহ বলেন, আমাদের পরিকল্পনা ছিলো বরিশাল জিলা স্কুল মাঠে প্রার্থীর সংবর্ধনা আয়োজনের। কিন্তু সেখানে এসএসসি পরীক্ষার কারণে সে পরিকল্পনা বাদ দিয়ে জিলা স্কুল মোড়ে অস্থায়ী মঞ্চ নির্মান করা হবে। সেখানে দলের বিভিন্নস্তরের নেতাকর্মীরা দলের মেয়র প্রার্থীকে ফুল দিয়ে বরণ করে নিবেন। এজন্য সবধরনের প্রস্তুতি এগিয়ে চলছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৮ মে বিকেলের এ সংবর্ধনা ও বরণ অনুষ্ঠানে দলের ৩০টি ওয়ার্ডের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী ছাড়াও বরিশাল সদর উপজেলার আশপাশের এলাকার কর্মী-সমর্থকরা যোগ দেবেন। দলের সাংগঠনিক শক্তি এবং সিটি নির্বাচনের ভোটের মাঠে তাদের প্রভাব বিস্তারের জন্য বড় জমায়েত ও শো-ডাউন নিশ্চিত করার জন্য ভেতরে-ভেতরে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
দলের নেতারা জানিয়েছেন, ইসলামি আন্দোলনের প্রার্থীকে ঘিরে এবার যে চমক সৃষ্টি হয়েছে, তা কাজে লাগাতে দল সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে। একইসাথে বড় ধরনের প্রস্তুতি নিতে তারা গণসংযোগ বা নির্বাচনী কার্যক্রমে মাঠে নামতে সময় নিচ্ছেন। সবকিছু গুছিয়ে তারা একসাথে মাঠে নামতে চান। এ ছাড়া দলের শক্তি-সামর্থ্যরে জানান দিতে তারা ধীরে চলো নীতিতে এগোচ্ছেন। সূত্রমতে, দলের প্রার্থী মুফতী মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম এখনো ঢাকায় অবস্থান করছেন। তিনি আগামী ৮ মে সড়কপথে বরিশালে আসবেন। ওইদিন বিকেলে তাকে নগরীর প্রবেশদ্বার গড়িয়ারপাড় এলাকায় বরণ করবেন নেতাকর্মীরা। এজন্য অন্তত দুই হাজার মোটরসাইকেল নিয়ে তাকে শোভাযাত্রা সহকারে বরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এরপর মোটরসাইকেল বহর নিয়ে নথুল্লাবাদ ও চৌমাথা হয়ে আমতলার মোড় দিয়ে শোভাযাত্রাটি বরিশাল শহরে প্রবেশ করে জিলা স্কুল মোড়ের সংবর্ধনা দেওয়ার অস্থায়ী মঞ্চে আসবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইসলামি আন্দোলনের একাধিক নেতৃবৃন্দরা জনকন্ঠকে বলেন, বরিশাল সিটিতে বিএনপির আলাদা ভোটব্যাংক রয়েছে। কিন্তু এবার বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না। পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় দলে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। এবার মনোনয়ন পেয়েছেন সাদিক আব্দুল্লাহর ছোট চাচা আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত। ফলে মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের এখনো খোকন সেরনিয়াবাতের পাশে দেখা যায়নি। এমনকি নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের নেতারা সাদিক আব্দুল্লাহর অনুগত হওয়ায় তারাও দলীয় প্রার্থীর সাথে যোগযোগ করছেন না। তারা আরও বলেন, বিএনপির ভোটের মাঠে না থাকা এবং আওয়ামী লীগে দলীয় কোন্দল থাকায় এবার ভোটের মাঠে সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে হাতপাখা মার্কা চমক সৃষ্টি করবে।
ইসলামী আন্দোলনের বরিশাল মহানগর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আজিজ বলেন, নানা কারণে এবার ইসলামি আন্দোলনের প্রার্থী ভোটের মাঠে আলাদা গুরুত্ব পাচ্ছে। এমনকি আমরা জয়ের লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামবো। এজন্য ইতোমধ্যে সবধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে আগামী ৮ মে দলীয় মেয়র প্রার্থীকে বরণের প্রস্তুতি চলছে। তিনি আরও বলেন, আশা করছি এবার প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে ইসলামি আন্দোলন যেভাবে চমক দিয়েছে, ভোটের মাঠেও তেমন চমক সৃষ্টি হবে।
নৌকার কর্মীদের অভিযোগ ॥ নৌকার প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির অন্যতম সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর আমিন উদ্দিন মোহন বৃহস্পতিবার সকালে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত বুঝে শুনেই সাদিক আব্দুল্লাহ ও তার অনুসারীদের বাদ দিয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠণ করেছেন। কারণ মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার পর মুখে নৌকার পক্ষে কাজ করার কথা বললেও আজ পর্যন্ত বরিশালে আসেননি মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ। পাশাপাশি তার অনুসারী কেউ এখন পর্যন্ত নৌকার পক্ষে মাঠে নামেনি। তাছাড়া আমাদের কাছে খবর আছে যে, হাতপাখার প্রার্থী করার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন সাদিক আব্দুল্লাহর পরিবারের সদস্যরা। তা নাহলে হঠাৎ করে ইসলামি আন্দোলনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা সিনিয়র নায়েবে আমীর ফয়জুল করিমের এখানে মেয়র প্রার্থী হওয়ার কোন কারণ নেই। ইসলামি আন্দোলনের নেতাদের সাথে মেয়র সাদিক অনুসারীদের নিয়মিত যোগাযোগও রয়েছে। আর এসবই করা হচ্ছে নৌকার প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাতকে পরাজিত করার জন্য। তিনি আরও বলেন, শওকত হোসেন হিরনের নির্বাচনের সময়ও একইভাবে ষড়যন্ত্র করে তাকে (হিরন) হারানো হয়েছিলো।
খোকন সেরনিয়াবাতের আরেক অন্যতম অনুসারী আওয়ামী লীগ নেতা ও নগরীর ২০নাম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বিপ্লব মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর পরিবারের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, তারা যতোই ষড়যন্ত্র করুক না কেন প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাতের পক্ষে পুরো বরিশাল নগরবাসী এখন ঐক্যবদ্ধ। আগামী ১২ জুনের নির্বাচনে ইনশাআল্লাহ নৌকার বিজয় হবে।
অভিযোগের বিষয়ে বর্তমান সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া নির্দেশ আমি মাথা পেতে নিয়েছি। নৌকার পক্ষে কাজ করবো বলেও ঘোষণা দিয়েছি। তাছাড়া মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নৌকার পক্ষে কাজ করার জন্য নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সেরনিয়াবাত পরিবারের কারও রক্তে বেঈমানী বলতে কিছু নেই। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশের বাহিরে সেরনিয়াবাত পরিবারের কেউ কখনো কোনদিন যায়নি, ভবিষ্যতেও যাবেনা।
অপরদিকে নৌকার প্রার্থীর অনুসারীদের অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করে হাতপাখার প্রার্থী মুফতী মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, বরিশাল যেহেতু আমার জন্মস্থান, তাই এখানে আমাদের দলের প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত বহু আগের। পাশাপাশি আমি নিজে নগরীর ২৪ নাম্বার ওয়ার্ডের ভোটার। আসলে নানা কারণে নির্বাচনী মাঠে আমাদের শক্ত অবস্থানে ভীত হয়ে এসব অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে।
নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ ববি ছাত্রলীগ ॥ আসন্ন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতে পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা। ইতোমধ্যে তারা নৌকার পক্ষে নিজেদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিষয়টি জানান দিতে ক্যাম্পাসে শোভাযাত্রা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা অমিত হাসান রক্তিম, মুয়ীদুর রহমান বাকি, রাকিব হাসান রনি ও সাইমুন ইসলামের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত শোভাযাত্রায় বরিশাল নগরীকে দেশের মধ্যে সর্বপ্রথম স্মার্ট আধুনিক তিলোত্তমা নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে নৌকা মার্কার প্রার্থীকে জয়যুক্ত করতে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সকলকে আহবান করা হয়।
শোডাউন করে মনোনয়নপত্র জমা দিলে ব্যবস্থা ॥ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। মনোনয়পত্র দাখিলের সময় কোনো প্রার্থী যাতে শোডাউন বা মিছিল না করে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। নির্দেশে উল্লেখ করা হয়েছে, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার সময় পাঁচজনের বেশি সমর্থক নিয়ে যাওয়া যাবে না। আগামী ১৬ মে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার শেষদিন।
সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় ॥ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার মার্কার মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত বৃহস্পতিবার সকাল দশটায় বরিশাল নগরীতে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেছেন। শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় নৌকার প্রার্থী বলেন, আধুনিক তিলোত্তমা স্মার্ট নগরী গড়ে তোলার জন্য প্রধানমন্ত্রী আমাকে নৌকার মনোনয়ন দিয়ে বরিশালে পাঠিয়েছেন। আমি মেয়র নির্বাচিত হতে পারলে ইনশআল্লাহ নগরবাসীর মতামতের ওপর গুরুত্ব দিয়ে সবধরনের উন্নয়নমূলক কাজ করা হবে। সেখানে সাংবাদিকদের বড়ধরনের ভূমিকা থাকবে। তাই প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমি সকল সাংবাদিকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছি। প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী নাসির উদ্দিন বাবুলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেনের সঞ্চলনায় মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে সাবেক সভাপতি মেহেরুন্নেসা বাবুল, সদস্য কাজী কামাল, নৌকা মার্কার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট লস্কর নুরুল হক, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আফজালুল করিম, নৌকার প্রাথীর ছেলে প্রবাসী আবিদুর রহমান সেরনিয়াবাতসহ বরিশাল নগরীতে কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
নৌকা মার্কার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির দপ্তর সেল সূত্রে জানা গেছে, খোকন সেরনিয়াবাত বৃহস্পতিবার সকালে প্রেসক্লাবের মতবিনিময় শেষে বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে সদর রোড হয়ে হাসাতাল রোড, বরিশাল ল’ কলেজ এলাকার ব্যবসায়ীসহ সর্বসাধারণের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। এরপর বিকেল পাঁচটার দিকে বরিশাল লৌহ শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের সাথে নির্বাচন পরিচালনার প্রধান কার্যালয়ে মতবিনিময় করেন। রাত আটটার দিকে একই কার্যালয়ে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে এবং রাত সাড়ে আটটায় নৌকার প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত একই কার্যালয়ে বরিশালের সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন।
১৩৫ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ॥ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীসহ এ পর্যন্ত মেয়রপদে ছয়জনসহ সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিলিয়ে ১৩৫ জন পদপ্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, এখন পর্যন্ত মেয়র পদে মোট ছয়জন প্রার্থী, কাউন্সিলর সাধারণ পদে ১০৫ জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের ২৪ জন কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মনোনয়নপত্র ক্রয় করেছেন।
তিনি আরও জানান, ছয়জন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত, জাতীয় পার্টি মনোনীত ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন তাপস, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, স্বতন্ত্র পদপ্রার্থী সৈয়দ ইসাহাক, আলী হাওলাদার ও লুৎফর কবির মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
উল্লেখ্য, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র গ্রহণ ও জমা দেওয়ার শেষ তারিখ আগামী ১৬ মে। বাছাই ১৮ মে এবং ২৫ মের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। আগামী ১২ জুন ভোটগ্রহণ করা হবে।