মুলাদীতে বিচারের দাবিতে করা মানববন্ধন কর্মসূচিতে ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে হামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার মুলাদী সদর ইউনিয়নের কাজিরহাট বাজারে এই ঘটনা ঘটে। সরকারি সহায়তা বঞ্চিত এবং নির্যাতনের শিকার একটি একটি দরিদ্র পরিবার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি করতে গিয়ে পুনঃরায় হামলার শিকার হন। এই ঘটনায় দরিদ্র পরিবারের সদস্য ও সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। মুলাদী সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কামরুল আহসান, ইউপি সদস্য সাখাওয়াত মল্লিক ও ইরান সরদার এই হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন আহতরা। জানা গেছে, গত ১৮ এপ্রিল মুলাদী সদর ইউনিয়নের আজাহার মোল্লার ছেলে মাসুম মোল্লা ও তার স্ত্রী সরকারি সহায়তার (ভিজিডি) চাল চাইতে গেলে ইউপি সদস্য ইরান সরদার ও তার লোকজনের হামলা চালায়। ওই ঘটনায় মাসুমের ভাই বাদী হয়ে ইরান সরদারসহ ৯জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। ওই মামলার আসামীদের গ্রেপ্তার এবং দ্রুত বিচারের দাবিতে বৃহস্পতিবার মানববন্ধন করেন ওই পরিবারের সদস্যরা। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যান সাংবাদিকরা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল আহসান ও মেম্বাররা ওই পরিবার এবং সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালান। এ সময় মাসুম মোল্লা, সাংবাদিক রেজাউল করিম, লিটন তালুকদারসহ ১০জন আহত হয়েছেন।
মাসুম মোল্লা জানান, ‘আমাকে ভিজিডি কার্ড দেওয়ার কথা বলে ৫ হাজার টাকা নিয়েছিলেন ইউপি সদস্য ইরান সরদার। কিন্তু তিনি কোনো কার্ড দেননি। এমনকি সরকারি সহায়তার চালও দেওয়ার ব্যবস্থা করেননি তিনি। গত ১৮ এপ্রিল বিকেলে স্ত্রীকে নিয়ে ওই ইউপি সদস্যের বাড়িতে গিয়ে ঘুষের ৫ হাজার টাকা ফেরৎ চাই। তখন তিনি টাকা না দিয়ে আমাকে এবং আমার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে পিটিয়ে আহত করেছেন। ওই ঘটনায় মামলা করলে ইউপি সদস্য ও তার লোকজন আমাদের এলাকা ছাড়া করার হুমকি দেয়। ভীত হয়ে এবং বিচারের দাবিতে আমার মা, স্ত্রী ও ভাইদের নিয়ে কাজিরহাট বাজারে মানববন্ধনের আয়োজন করি। মুলাদী সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা মানববন্ধন কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে ৮/১০জনকে আহত করেছেন।’
আহত সিএনএন বাংলা টিভির ক্যামেরাম্যান রেজাউল করিম জানান, ‘দরিদ্র পরিবারের মানববন্ধনের সংবাদ পেয়ে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে কাজিরহাট বাজারের সংবাদ সংগ্রহ করতে যাই। ওই সময় ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল আহসান, ইউপি সদস্য সাখাওয়াত মল্লিক, ইরান সরদার, জাকির ফরাজী লোকজন নিয়ে মানববন্ধনকারী ও আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে ক্যামেরা ভাঙচুর করে এবং ৪জন সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করেছে। এই ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৪জনের বিরুদ্ধে মুলাদী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি।’
এব্যাপারে মুলাদী সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. কামরুল আহসান হামলার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘ বহিরাগত কিছু লোক কাজিরহাট বাজারে কথিত মানববন্ধনের জন্য জড়ো হয়েছিলো। ইউপি সদস্যরা সেখানে গেলে তারা পালিয়ে যায়। হামলা কিংবা সাংবাদিক আহত হওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তুষার কুমার ম-ল বলেন, ‘কাজিরহাট বাজারে মানববন্ধন কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’