আসন্ন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার মার্কার প্রার্থী প্রধানমন্ত্রীর ফুফাতো ভাই খোকন সেরনিয়াবাতের পক্ষে সভা ডাকায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে লাঞ্ছিত করে হত্যাসহ লাশ গুমের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয় ৩০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর সমর্থক গোলাম মোস্তফা এবং তার সহযোগিরা নৌকার পক্ষে কাজ করতে বাঁধা প্রদান করে এ হুমকি দিয়েছেন। বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ৩০ নাম্বার ওয়ার্ডবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা রুবেল তালুকদার। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মরহুম শামসুল হক তালুকদারের ছেলে দুলাল হোসেন তালুকদার, মৃত মুক্তিযোদ্ধার ভাই মুনসুর তালুকদার, ৩০ নাম্বার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কালাম মোল্লা, আওয়ামী লীগ কর্মী মানিক বেপারীসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে রুবেল তালুকদার বলেন, আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নগরীর ৩০ নাম্বার ওয়ার্ডের স্থায়ী নাগরিক। আসন্ন সিটি নির্বাচনে স্বাধীনতার প্রতীক নৌকা মার্কা বিজয়ের লক্ষ্যে গত ৫ মে দিবাগত রাত সোয়া নয়টার দিকে আমরা ওয়ার্ডের মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয়ে বসে শতাধিক এলাকাবাসী ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের নিয়ে নির্বাচন নিয়ে আলোচনায় বসি। আকস্মিক ১৫/২০টি মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে ৩০নাম্বার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান মেয়রের অনুসারী গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক লোক অফিসের সামনে হাজির হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উল্লেখ করা হয়, গোলাম মোস্তফা ও তার সহযোগিরা মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যঙ্গ করে অশ্লীল গালিগালাজ করেন। পাশাপাশি বিসিসি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীকে নিয়েও অশালিন কথাবার্তা বলেন। এ সময় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দুলাল হোসেন তালুকদার গোলাম মোস্তফা ও তার সহযোগিদের প্রতিবাদ করায় তাকে শারিরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। একপর্যায়ে আলোচনা সভা পন্ড করে ভবিষ্যতে এ ধরনের সভা ডাকা হলে তাকে (দুলাল) হত্যা করে লাশ গুমের হুমকি প্রদান করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি মুক্তিযোদ্ধার সন্তানগণ এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ৩০ নাম্বার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কালাম মোল্লা বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি এবং বরিশাল এয়ারপোর্ট থানা পুলিশকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি অবহিত করা সত্বেও পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেনি। মুক্তিযোদ্ধার ছেলে দুলাল হোসেন তালুকদার বলেন, ঘটনার সময় আমিও এয়ারপোর্ট থানা পুলিশকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিষয়টি অবহিত করা সত্বেও পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেনি। তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর থেকে আমি আমার জীবন নিয়ে উদ্বিগ্ন। পুরো অভিযোগ অস্বীকার করে ৩০ নাম্বার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফা বলেন, দুলাল হোসেন তালুকদারের মাথায় সমস্যা আছে। তাই সে আমার প্রতিপক্ষের লোকজনের শেখানো বুলি দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করেছেন।