মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে পাগলা কুকুরের উপদ্রব। গত এক সপ্তাহে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অন্তত অর্ধশতাধিক মানুষ কুকুরের আক্রমণের শিকার হয়েছে। শুধুমাত্র বৃহস্পতিবারই একদিনে কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছে ২৪ জন। আহতদের মধ্যে ১৭জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
সরোজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি গ্রামে পাগলা কুকুরে উপদ্রব বেড়ে গেছে। কুকুরের কামড়ের সবচেয়ে বেশি আহত হয়েছে ছোট শিশু এবং মহিলারা। অবস্থা এরকম কুকুরের ভয়ে ছোট বাচ্চাদের একা ছাড়ছেন না অভিভাবকরা। এদিকে কুকুরের কামড়ে আহত অনেকে অবহেলা বশত হাসপাতালে আসছেন না। বিষয়টিকে হেলাফেলা না করে দ্রুত ডাক্তারের কাছে আসার পরামর্শ দিয়েছে চিকিৎসকরা।
চর বাউশিয়া গ্রামের রায়হান বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে কুকুরের কামড়ে আহত হন তিনি। তাদের এলাকার অনেকেই পাগলা কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছে।
গজারিয়া ইউনিয়নের গোসাইর গ্রামের রিপন মিয়া বলেন, বাড়ি থেকে বের হয়ে পাগলা কুকুরের কামড় খান তিনি। অবস্থা এরকম কুকুরের ভয়ে কেউ বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না।
বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের ইউপি সদস্য রিটু প্রধান বলেন, কিছুদিন আগে তেতৈতলা গ্রামে কুকুরের কামড়ে নারী শিশু সহ ১৮ জন আহত হয়। বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী একজোট হয়ে পাগলা কুকুরটিকে মেরে ফেলে।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার তাদের হাসপাতালে মোট ১৭ জন রোগী এসেছিল। তার মধ্যে তিনজনের হওয়ায় আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে ঢাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অনেক রোগী এমন আছেন যারা হালকা আঁচর লেগেছে অথবা রক্ত বের হয়নি এমন ধারণা থেকে হাসপাতালে আসেন না তাদের সংখ্যাও কম নয়। শনিবার দুপুর পর্যন্ত একজন রোগী হাসপাতালে এসেছে। কুকুরের কামড়ে তার পায়ের অল্প একটু জায়গার মাংস উঠে গেছে। তাকেও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোবাশ্বেরা বিনতে আলম জানান, গত এক সপ্তাহে কুকুর এবং বিড়ালের কামড়ে আহত হয়ে অন্তত অর্ধশত মানুষ তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। একসাথে এত রোগী আগে কখনো আসেনি। হাসপাতালে ভ্যাকসিন সংকট রয়েছে। বিষয়টি মুন্সীগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে।