ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে যুদ্ধাপরাধ মামলায় ২০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মোঃ আলিম উদ্দিন খান (৭৭) কে গ্রেপ্তার করেছে।
রোববার (৭ মে) দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিত্বে পাগলা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে পাশ্ববর্তী গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কাওরাঈদ ইউনিয়নের বেলদিয়া গ্রামে মেয়ে জামাই এর বাড়ি থেকে যুদ্ধারপরাধী আলিম উদ্দিন খানকে গ্রেপ্তার করে। গত ২০১৪ সালে আলিম উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা দায়েরের পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ২০২১ সালের ২১ ফেব্রয়ারি আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইবুনাল মো. আলিম উদ্দিন খান সহ গফরগাঁও উপজেলার ৮ জনকে কারাদণ্ড দেয়। এই মামলায় আলিম উদ্দিন খানসহ ৫ জনকে ২০ বছর করে কারাদণ্ড এবং ৩ জনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
পলাতক আলিম উদ্দিন খানের বাড়ি উপজেলার পাগলা থানার সাধুয়া গ্রামে। তাঁর পিতার নাম মরহুম আবদুল গফুর খান। পুলিশ ও মামলার বাদীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আলিম উদ্দিন খান ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতা বিরোধী ভূমিকায় লিপ্ত ছিলেন। সে তার সশস্ত্র রাজাকার সহযোগী ফয়জুল্লাহ, আবদুর রাজ্জাক, সামসুজ্জামান কালাম, আবদুল খালেক, বাদশা, খলিলুর রহমান মীর ও অন্যান্য সহযোগীদের নেতৃত্বে¡ গফরগাঁও উপজেলার নিগুয়ারি, টাংগাব, দত্তেরবাজার ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণ, হত্যাসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনে অংশগ্রহণ করে।
গত ২০১৪ সালের সাধুয়ার গ্রামে আফাজ উদ্দিন বাদী হয়ে আলিম উদ্দিন খান ও তার সহযোগীদের নামে মানবতাবিরোধী মামলা দায়ের করে। পরে ২০১৭ সালের ৬ এপ্রিল ট্রাইবুনাল তাঁর নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। স্থানীয় বাসিন্দা রুবেল মিয়া বলেন, ‘গত দুদিন আগে গ্রেপ্তারকৃত রাজাকার আলীম উদ্দিনের মেয়ের স্বামী মারা যান। এ সময় তিনি জনসম্মুখে উপস্থিত হলে অনেক মানুষ তাঁর বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে পুলিশকে খবর দিয়েছে। এরপর পুলিশ এসে তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।’
এ ব্যাপারে পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান বলেন, যুদ্ধাপরাধ মামলায় ২০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আলিম উদ্দিনকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামীকে রোববার আদালতের মাধ্যমে ময়মনসিংহ জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।