খুলনার কয়রা উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও সহকারী জজ আদালত ভবনটি গণপূর্ত বিভাগ থেকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয় ২০১৩ সালে। ঝুঁকি জেনেও গত ১০ বছর ধরে সেখানেই চলছে দুটি আদালতের কার্যক্রম। বিকল্প জায়গা না থাকায় এভাবে বিচারিক এবং দাপ্তরিক কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আদালত সংশ্লিষ্টরা। আদালতের পেশকার দেলোয়ার হোসেন জানান, সম্প্রতি আদালত ভবনের হাজতখানার ভাঙা জানালা দিয়ে একজন আসামি পালানের চেষ্টা করে। ঘটনাটি নিরাপত্তারক্ষীদের নজরে আসায় তাকে আটকানো সম্ভব হয়। তিনি বলেন, প্রতি বছর মেরামত করা হলেও ছয় মাস না যেতেই একই অবস্থা হয়। দেয়াল ও পিলার থেকে খসে যাওয়া সিমেন্ট-বালুতে নথিপত্র নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বর্ষা এলে ছাঁদ চুইয়ে পানি পড়ে। তখন গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় থাকতে হয়। জানা গেছে, ১৯৮৪ সালে ১ একর ৬১ শতাংশ জমির ওপর আদালত ভবন নির্মাণ করা হয়। ভবনটিতে মোট ১৫টি কক্ষ রয়েছে। এর পূর্ব পাশে সহকারী জজ আদালত এবং পশ্চিম পাশে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কার্যক্রম চলে আসছে। দুটি আদালতে প্রতিদিন গড়ে একশ থেকে দেড়শ মামলার হাজিরা ও শুনানির দিন ধার্য থাকে। ফলে সেখানে প্রতিদিন গড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ মানুষের সমাগম ঘটে। আদালতের জেনারেল রেজিস্ট্রেশন অফিসার (জিআরও) হুমায়ুন কবির জানান, সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় রয়েছে আদালত ভবনের পুলিশ ব্যারাক ও হাজতখানাটি। সেখানে ঝুঁকি নিয়ে ১৫ জন পুলিশ সদস্যকে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। হাজতখানায় আসামি রেখে দুশ্চিন্তায় থাকতে হয় তাদের। খুলনা গণপূর্ত বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবু জাফর সিদ্দিক বলেন, ভবনটির স্থায়িত্ব ও বাহ্যিক অবস্থা বিবেচনা করে ২০১৩ সালে এটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। সে সময় ভবনটি ভেঙে সেখানে নতুন আদালত ভবন নির্মাণের জন্যও সুপারিশ পাঠানো হয়। দীর্ঘদিন পার হলেও ফিরতি কোনো চিঠি না পাওয়ায় বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।