হাস্যোজ্জল ফুট ফুটে শিশুটি ব্যাগ ঘাড়ে নিয়ে আর স্কুলে যাবে না। সকালে বাড়ী থেকে বের হয়ে স্কুলে যাওয়ার পথে সড়ক পারাপারের সময় চার্জার ভ্যানের ধাক্কায় সে মারাত্মক ভাবে আহত হয়। দুপুরে আহত শিশু মাইসা খাতুন (৯) মারা যায়।
মঙ্গলবার (৯ মে- ২০২৩) সকাল সোয়া ৯টার দিকে লালপুর উপজেলার ঈশ্বরদী ইউনিয়নের নবীনগর (কবিরাজপাড়া) নামক স্থানে বাড়ির সামনে লালপুর- ঈশ্বরদী সড়ক পার হয়ে স্কুলে যাওয়ার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে। শিশু মাইসা নবীনগর (কবিরাজপাড়া) গ্রামের মোবারক হোসেনের মেয়ে ও নবীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে লালপুরে উপজেলার ঈশ্বরদী ইউনিয়নের নবীনগর (কবিরাজপাড়া) নামক স্থানে বাড়ির সামনে লালপুর-ঈশ্বরদী রাস্তা পার হয়ে স্কুলে যাওয়ার পথে শিশু মাইসা খাতুনকে একটি অটো চার্জার ভ্যান ধাক্কা দিলে রাস্তায় ছিটকে পড়ে মাথায় আঘাত পেয়ে মারাক্তক আহত হয়। এরপর ভ্যানটি তার পেটের ওপর চাপা দিয়ে চলে যায়। তাৎক্ষণিক স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে আসেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক সাময়িক চিকিৎসা শেষে পেটের আলট্রাসনোগ্রাফির জন্য প্রেসক্রিপশন করেন। পরিবারের লোকজন তাকে একটি বেসরকারী হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে আলট্রাসনোগ্রাফি করে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরিবারের লোকজন খাওয়া-দাওয়া শেষে বিছানায় শুইয়ে থাকা অবস্থায় হঠাৎ দুপুর দেড়টার দিকে শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখা দিলে পূনরায় লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মাইসাকে মৃত ঘোষণা করেন।
লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক সোহেল রানা বলেন, প্রাথমিকভাবে তার ডান হাত ও কপালে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। কপালে আঘাতে কারণে সেলাই দেওয়া হয়। সে সময় পেটে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করার কথা বলায় অল্ট্রাসনোগ্রাফ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। ভ্যানের চাকা পেটের ওপর দিয়ে চলে যাওয়ায় অভ্যন্তরীন ক্ষত হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরপর দেড়টার দিকে তাকে পূনরায় হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই সে মারা যায়।
নবীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জালাল উদ্দীন বাবু জানান, সে ওই বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী ছিল। শিশু মাইসা খাতুনের অকাল মৃত্যুতে শুধু বিদ্যালয় নয় এলাকায় শোকের ছাঁয়া নেমে আসে।
লালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ উজ্জ্বল হোসেন জানান, খবর পেয়ে লালপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেছে। এখন পর্যন্ত (মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা) এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।