বাবা জ্বালানি তেলবাহী ট্যাংকার এমভি এমাদি-১ এর চীফ ড্রাইভার কুতুব উদ্দিনের সাথে ঘুরতে এসেছিলো ছেলে স্বাধীন (২২)। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে কীর্তনখোলা নদীর চাঁদমারী এলাকায় নোঙর করে রাখা ট্যাংকার বিস্ফোরনে ঘটনাস্থলেই চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড এলাকার বাসিন্দা স্বাধীন নিহত হয়।
পাশাপাশি কুতুব উদ্দিনকে গুরুত্বর দ্বগ্ধ অবস্থায় প্রথমে শেবাচিম হাসপাতালে ও পরে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনার একদিনপরেও (শুক্রবার সকাল পর্যন্ত) কুতুব উদ্দিন জানেন না তার সাথে ঘুরতে আসা সন্তান স্বাধীন মারা গেছে।
জাহাজের ডেক টেন্ডর সুমন সেন জানান, ট্যাংকারটি চট্টগ্রাম থেকে সাড়ে তিন লাখ লিটার পেট্রোল ও ১০ লাখ লিটার ডিজেল নিয়ে দুইদিন আগে কীর্তনখোলা নদীর বরিশাল নগরী সংলগ্ন চাঁদমারী খেয়াঘাটের অপরপ্রান্তে নোঙর করে রাখে। মেঘনা তেলের ডিপোতে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে জাহাজের তেল খালাস করার কথা ছিল। সে অনুযায়ী স্টাফরা ইঞ্জিন রুমে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই বিকট শব্দে সেখানে বিস্ফোরণ ঘটে।
বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের উপণ্ডপরিচালক মিজানুর রহমান জানান, ট্যাংকারে ১৬ জন নাবিক ছিলো। এরমধ্যে ইঞ্জিন রুমে আকস্মিক বিস্ফোরনে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতরা হলো-স্টাফ বাবুল কান্তি দাস (৬৪) ও স্বাধীন (২২)। এ ঘটনায় আবুল কাসেম নামের একজন স্টাফ নিখোঁজ রয়েছেন। ধারনা করা হচ্ছে তিনি (কাসেম) নদীতে লাফিয়ে পরে নিখোঁজ হয়েছেন। দূর্ঘটনার সময় অন্যান্য নাবিকরা জাহাজের ওপরে থাকায় তারা অক্ষত রয়েছেন।
মেঘনা পেট্টোলিয়ামের বরিশাল ডিপো ম্যানেজার কামরুল হাসান বলেন, দ্বগ্ধ অবস্থায় চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড এলাকার বাসিন্দা কুতুবউদ্দিন, রুবেল হোসেন ও কামাল হোসেনকে প্রথমে শেবাচিম হাসপাতালে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওইদিন রাতে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, জ্বালানী তেল খালাসের পূর্বে ট্যাংকারের ইঞ্জিন রুমে দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাৎক্ষনিক ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রনে আনায় তেলের কোন ক্ষতি হয়নি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ট্যাংকারের এক নাবিক বলেন, তেলের ট্যাংকারে গ্যাস জমে। ওই গ্যাস বের করে তারপর ইঞ্জিন চালু করতে হয়। তেল খালাসের জন্য গ্যাস বের না করেও ইঞ্জিন চালু করতে গিয়েই ইঞ্জিন বিস্ফোরিত হয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে।