চলতি মৌসুমে বোরো ধানে ভালো ফলন হওয়ায় খুশি দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকরা। এরইমধ্যে ঘূর্ণিঝড় মোখা কিছুটা চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে কৃষকদের মাঝে। ফলে এখন পুরোদমে চলছে মাঠে থাকা পাকা ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা। যদিও শ্রমিক সংকটে কিছুটা হতাশ কৃষকরা। কৃষি বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের দাবি, শ্রমিক সংকটের মাঝেও কঠোর পরিশ্রমের মধ্যদিয়ে ইতোমধ্যে জমিতে থাকা প্রায় ৯০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবেলায় জমিতে থাকা বাকি ধান কেটে দ্রুত ঘরে তোলার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কৃষি বিভাগ ও আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ যদি প্রবলশক্তি নিয়ে ভয়াবহ রূপ ধারণ করে তাহলে উপকূলের নিচু এলাকা প্লাবিত হবে। সেই সঙ্গে ভারী বর্ষণ ও ঝড়ো বাতাসের কারণে পাকা ধানের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আগেই কৃষকদের পাকা ধান কেটে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর বিভাগের ছয় জেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো এক লাখ ৯৩ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে। আর আবাদ হয়েছে এক লাখ ৯৪ হাজার ২৩৩ হেক্টর জমিতে। অপরদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সম্পর্কে আগেভাগেই সতর্ক ছিল বরিশাল কৃষি বিভাগ। বিরূপ আবহাওয়ায় ফসলের যাতে ক্ষতি না হয় সেলক্ষ্যে মাঠপর্যায়ের সকল কর্মকর্তারা কৃষকদের সচেতন করার পাশাপাশি বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন। যার ধারাবাহিকতায় শুক্রবার পর্যন্ত বিভাগে ছয় জেলায় প্রায় ৯০ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে। পাশাপাশি জমিতে থাকা বাকি ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করেছেন বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর জেলার কৃষকরা। এরমাঝে যারা শ্রমিক পাচ্ছেন না সেইসব কৃষক পরিবারের পুরুষ সদস্যদের পাশাপাশি নারীরাও এগিয়ে এসেছেন ধান কাটায় সাহায্য করতে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরিশালের উপ-পরিচালক মুরাদুল হাসান জানান, বরিশাল জেলায় চলতি মৌসুমে ৬১ হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। যারমধ্যে শুক্রবার পর্যন্ত প্রায় ৯০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. শওকত ওসমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র কারণে উদ্ভুত সমস্যা মোকাবেলা এবং ফসল রক্ষার জন্য আগেভাগেই মাঠপর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকদের সচেতন করা হয়েছে।