নিয়ামতপুরে আশংকাজনক হারে বাড়ছে আত্মহত্যার প্রবনতা। বিষয়টি নিয়ে উৎকণ্ঠা সবার মাঝে। গত কয়েকদিনে এনজিও কর্মীসহ আরো দু’জন স্কুল ছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে অঅত্নহত্যা করেছেন। এসকল আত্মহত্যার সঠিক রহস্য জানা যায়নি। তবে সচেতন মহলের দাবী, আত্মহত্যার সঠিক কারণ উদঘাটন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা এখনি দরকার। নইলে অদুর ভবিষ্যতে তুচ্ছ ঘটনায় আত্মহত্যার বিষয়টি সংক্রামিত হয়ে ভয়াবহ রুপ নিতে পারে।
নিয়ামতপুরে আবারে পারিবারিক কলহের জেরে মানিক ভুঁইয়া (৪৩) নামের এক ব্যক্তি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে জানা গেছে। শুক্রবার রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের কানইল করবলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। আত্মহননকারী মানিক ভুঁইয়া নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার কাঞ্চন এলাকার মৃত চৈতন্যের ছেলে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মান্দা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মতিয়ার রহমান।
নিহতের পরিবার ও থানা সূত্রে জানা গেছে, মানিক ভুঁইয়ার প্রথম স্ত্রী মারা যাবার পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর ভালই কাটছিলো সংসার। কিন্তু হঠাৎ করেই দ্বিতীয় স্ত্রী ও সন্তান রেখে আবারো তিনি নিয়ামতপুর উপজেলার কানইল করবলা গ্রামের প্রতিমা দাসীকে বিয়ে করে ঘরজামাই থাকা শুরু করেন। এমন পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় স্ত্রী সন্তানদের ফেলে অন্যত্রে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন। এরপর সন্তান মানুয়েল ভুঁইয়াকে নিয়ে করবলা গ্রামেই প্রতিমা দাসীকে নিয়ে বসবাস করতেন মানিক ভুঁইয়া। এরি মাঝে নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে সে। প্রায় প্রতি রাতেই মদ্যপান করে বাড়িতে ফিরে কারনে-অকারনে স্ত্রী প্রতিমাকে গালিগালাজ ও শারিরীক ভাবে নির্যাতন করতেন।
ঘটনার দিনও মানিক ভুঁইয়া বিকেলে চোলাই মদ খেয়ে এসে আবারও স্ত্রীর উপর চড়াও হন ও একপর্যায়ে মারধর করেন। এমন ঘটনায় মাকে রক্ষা করতে ছেলে মানুয়েল (১৭) এগিয়ে এসে বাবার হাত থেকে মাকে রক্ষা করেন। এরপর রাতের খাবার খেয়ে তারা ঘুমাতে যায়। পরদিন সকালে ওই গ্রামের লুদানি নামের এক নারী হাঁটতে বের হয়ে প্রতিমা দাসীর বাড়ির বাহিরে মানিক ভুঁইয়াকে আমগাছের ডালে নাইলনের দড়ির দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে থাকতে দেখে চিৎকার শুরু করেন। তার চিৎকারে পরিবারের সদস্যরা ছুটে এসে তাকে দ্রুত নিচে নামালে মৃত অবস্থায় দেখতে পায় তারা। পরে ঘটনাটি থানা পুলিশকে জানালে তারা মানিক ভুঁইয়ার লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় মানিক ভুঁইয়ার বড় ছেলে মানুয়েল ভুঁইয়া বলেন, ‘আমার বাবা নিয়মিত নেশা করে বাড়িতে ফিরে অশান্তি করত ও আমার ছোট মাকে মারধর করত। গতকালও একই ঘটনা ঘটায় বাবা। রাতে আমরা ঘরে ঘুমাতে গেলেও বাবা বাড়ির আঙিনায় ভ্যানের ওপর শুয়ে পড়ে। সকালে দেখি আত্মহত্যার ঘটনা।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান জানান, মৃত্যুর সঠিক কোন কারণ জানা যায়নি। কারণ নির্ণয়ে ময়না তদন্তের জন্য মরদেহটি নওগাঁ সদর হাসপাকালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।