দেশের বেশিরভাগ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ। তাপদাহ হল একটি পদার্থের তাপমাত্রা বা তাপের উপর দাবার ক্ষমতার মাত্রা। পদার্থের অংশক সমুদ্রতল থেকে তাপ নেওয়া হলে এর তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। যখন পদার্থের মৌলটি ঠান্ডা হয় তখন তাপদাহ কমতে থাকে। তাপদাহ প্রভাবিত হয় পদার্থের বস্তুগত প্রকৃতি ও পরিবেশের উপর ভিত্তি করে। পদার্থের জাতি, দ্রবণ এবং গ্যাসের ধরন এবং পরিমাণ, এর অবস্থান, প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতি, সার্ক এবং ঝুঁকিপূর্ণ প্রদর্শনীগুলির সঙ্গে মিলে তাপদাহ পরিবর্তন করতে পারে। আমাদের দেশকে ছয়ঋতুর দেশ বলা হয়ে থাকলেও কালের বিবর্তনে তা এখন কাগজে কলমে আছে, বাস্তবে নাই। দেশে সবচেয়ে বেশি গরম পড়ছে এই বছর। প্রচণ্ড গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ, সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জীবন চরম কষ্টের মধ্যে যাচ্ছে, এমনকি প্রচণ্ড গরমে রেললাইন বেঁকে গিয়েছে। সারা বিশ্ব এই গরম ও জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে, বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। এখন এ সমস্যার সমাধানের জন্য বিপুল গাছপালা লাগানো প্রয়োজন। এগুলো স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের উন্নয়নে মূলগত কাজ করবে।
পরিবেশ ও জীবজগতের পরম বন্ধু এই বৃক্ষ। যেখানে বৃক্ষ বেশী থাকে, সেখানে বৃষ্টিপাতও বেশী হয়। বন্যা-জলোচ্ছ্বাসে মাটির ক্ষয়রোধ, খরায় ছায়া, ঘূর্ণিঝড়, অতিবৃষ্টি-অনাবৃষ্টি হ্রাসে বৃক্ষের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই আমাদের প্রধানমন্ত্রী অনেক আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন, আবাদি জমির এক ইঞ্চিও যাতে খালি না থাকে। কিন্তু দেশের জনসংখ্যা অনুযায়ী জমি অনেক কম। দিন দিন ফসলি জমি কমে যাচ্ছে, তারপর আবহাওয়া পরিবর্তনে প্রচণ্ড গরম, সেজন্যে এসবের মোকাবিলা করার জন্য প্রতিটি নাগরিকের সচেতনতা দরকার। পাশাপাশি এখানে এগিয়ে আসতে হবে সিটি করপোরেশানগুলোকেও। বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় দেশের প্রতিটি বাড়ির ছাঁদ সবুজময় করতে হবে। বাড়ির ছাদে বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ, ওষধি গাছ লাগানো ও সবজির বাগান করলে একদিকে খাদ্যর চাহিদা যেমন মিটবে তেমনি প্রচণ্ড গরম থেকে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবে মানুষ। ফ্লাইওভার ও সড়কে নানা স্থাপনার নিচে ওপরে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগিয়ে সবুজায়ন করা যেতে পারে। এতে সড়কগুলো দেখতে অনেক সুন্দরও হয়, তাপমাত্রা কমাতেও সহায়তা করে।
একটি বৃক্ষ দাঁড়িয়ে থাকলে সে পরিবেশ শুষ্ক করে এবং অক্সিজেন সরবরাহ করে। দেশের শহরে কিংবা গ্রামে, প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদ ও বন বিভাগের উদ্যোগে খালি জায়গায় বৃক্ষরোপণ করতে হবে। শহরে অনেক বাড়ির মালিকের ছাদবাগান করার ইচ্ছে আছে, কিন্তু বিভিন্ন উপকরণ জোগাড় করা ও কীভাবে করতে হবে না জানার কারণে সম্ভব পর হয়ে উঠে না। তাই সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে একটি টিম গঠন করতে হবে। এছাড়াও প্রকৃতিক তাপদাহ থেকে বাঁচতে আমাদের উচিত শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রনের জন্য পর্যাপ্ত পানি ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহন করা। অতএব পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা এবং বিশ্বকে ফুলে-ফলে সুশোভিত ও সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে এবং পৃথিবীর অস্তিত্ব রক্ষায় বৃক্ষরোপণের প্রতি আমাদেরকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে।