রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে চুরি হওয়া মহিষসহ তানোর থেকে চোরকে আটক করেছে গোদাগাড়ী থানা পুলিশ। এ ঘটনায় গোদাগাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার সকালে তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা পৌর এলাকার সাতপুকুরিয়া ব্রীজ মোড় থেকে চোর মুক্তারকে গ্রেপ্তার করেন গোদাগাড়ী থানা পুলিশ। এ ঘটনায় গোদাগাড়ী থানায় মহিষের মালিক আনিসুল হক বাদি হয়ে চোর মুক্তার ওরফে জাহাঙ্গীর কে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় গ্রামবাসীদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। তবে প্রকৃত চোর আটকের খবরে কিছুটা হলেও গ্রামে স্বস্তির নি:শ্বাস পড়েছে। গ্রামবাসীরা জানান, গত শুক্রবার গোদাগাড়ী উপজেলার দিঘাগ্রামের আনিসুল নামের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে মহিষ চুরি করে একই গ্রামের মুক্তার ওরফে জাহাঙ্গীর।
সে মহিষ টি পায়ে হেটে কৃঞ্চপুর গ্রামে নিয়ে আসছিলেন। পথে সাতপুকুরিয়া গ্রামের ব্রীজ মোড়ে মহিষ দেখে কয়েকজন কিনতে চায়। এ সময় গ্রামের অনেক লোকজন জড়ো হয়। একপর্যায়ে ১ লাখ ৪৯ হাজার টাকায় মহিষটি কিনেন সাতপুকুরিয়াগ্রামের মোজাম্মেল হক। সে আফজালের পুত্র। এদিকে মহিষের প্রকৃত মালিক দিঘা গ্রামের আনিসুলসহ লোকজন খোঁজাখুজির একপর্যায়ে সাতপুকুরিয়া মোড়ে এসে মহিষের খোঁজ করলে ক্রেতা মোজাম্মেলসহ গ্রামের লোকজন জানান সকালে মহিষ টি কিনা হয়েছে। তখন মহিষ দেখে মালিক আনিসুল বলেন এটাই আমার চুরি হওয়া মহিষ। সাথে সাথে গোদাগাড়ী থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হলে থানা পুলিশ তদন্ত করে মহিষটি প্রকৃত মালিক কে বুঝিয়ে দিয়ে ক্রেতা মোজাম্মেলকে থানায় নিয়ে যান। গ্রামের একাধিক প্রবীন ব্যক্তিরা জানান, মহিষটি সকলের সামনে দরদাম করে কিনেছে মোজাম্মেল। কিনার পর বিকেলের দিকে জানা যায় এটা চোরাই মহিষ। কেনার জন্য মোজাম্মেলকে থানায় নিয়ে যায়। আমরা গ্রামের প্রায় শতাধিক লোক চোর মুক্তার ওরফে জাহাঙ্গীরের খোঁজ পায়, সে পাঁচন্দর ইউপির কৃঞ্চপুর গ্রামের ওয়াজেদের বাড়িতে বিগত ২-৩ বছর ধরে আছেন।আমরা ভোরে তার বাড়ির আশপাশে অবস্থান করি। সকালের দিকে বাড়ি থেকে বের হওয়া মাত্রই তাকে ধরে পুলিশে খবর দেওয়া হলে পুলিশ তাকে আটক করে গোদাগাড়ী থানায় নিয়ে যান। তারা আরো জানান, মোজাম্মেল ১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা দিয়ে মহিষ কিনে অপরাধী কেন হবে। সে তো জনতার সামনে মহিষটি কিনেছে। এজন্য গ্রামের বড় ছোট পুরুষ মহিলারা চরম ক্ষোভে ফেটে পড়েন। মহিষটি কিনার সময় চোর মুক্তারের মোবাইলে ছবি তুলে রাখে। এজন্য চোরকে সহজে ধরতে পারা গেছে।
কৃঞ্চপুর গ্রামের বাসিন্দারা জানান, শুক্রবার দিবাগত রাতে কয়েক বার পুলিশ অভিযান দেয়। চোর মুক্তার কৃঞ্চপুরগ্রামের উত্তরপাড়ায় ওয়াজেদের বাড়িতে থাকে। সে ছাগলেরও ব্যবসা করত এবং গরু মহিষও কেনাবেচা করেন। সে দীর্ঘ দিনের চোর, তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই অনেক কিছুই বেরিয়ে আসবে বলে মনে করছেন তারা।মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোদাগাড়ী থানার এসআই সাহেদ আলী বলেন, সাতপুকুরিয়া মোড় থেকে চোরকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার মামলা নম্বর ২৯, তারিখ ১২/০৫/২০২৩। যেহেতু ক্রেতা মোজাম্মেল হকের কোন সম্পৃক্তা নাই, এজন্য তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। চোরকে রিমান্ডে নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন সে সবকিছু শিকার করেছেন। এজন্য রিমান্ডের প্রয়োজন নেই।