আসন্ন ২১ জুন রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত ও ১৪ দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এএইএম খায়রুজ্জামান লিটন। সোমবার (২২ মে) দুপুর ২টায় রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেনের হাতে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেন। মনোনয়নপত্র জমার পূর্বে নির্বাচন অফিসের সামনে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। এছাড়াও জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী হিসেবে সোমবার দুপুরে রাসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সাইফুল ইসলাম স্বপন।
এদিকে, মনোনয়নপত্র জমাদান শেষে মেয়রপ্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত ও ১৪ দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছি। আমি জানি নগরবাসীর আরো কিছু আশা-আকাঙ্খা অপূর্ণ আছে। সুযোগ পেলে আগামী ৫ বছরে সেগুলো পূরণ করতে চাই। রাজশাহীতে শিল্পায়নের অবস্থা ভালো না ও তেমন কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই। সেখানে কীভাবে শিল্পায়ন করা যায়, কর্মসংস্থান বাড়ানো হয়, সেক্ষেত্রে সচেষ্ট থাকবো। আগামীতেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতা নিয়ে আমি রাজশাহীকে কর্মমুখর নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। যে কারণেই আমার নির্বাচনী ইশতেহারে কর্মসংস্থানের বিষয়টি এক নম্বরে থাকবে। সাবেক মেয়র লিটন আরো বলেন, এরআগে ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই রাসিক নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়ে প্রায় শতকোটি টাকা ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে ওই বছরের ৫ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম। আর গতকাল (২১ মে) রাসিকের রাজস্ব খাতের তহবিলে প্রায় ৪০ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত রেখে পদত্যাগ করেছি। এখন পুনরায় মেয়র হিসেবে আমাকে চাচ্ছেন কী না তা নির্ভর করছে নগরবাসীর ওপর।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য প্রফেসর আবদুল খালেক, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য বেগম আখতার জাহান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জিনাতুন নেসা তালুকদার, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, সৈয়দ শাহাদত হোসেন, অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, ডা. তবিবুর রহমান শেখ, নাইমুল হুদা রানা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু ও মোস্তাক হোসেন, প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আসলাম সরকার, রাজশাহী অ্যাডভোকেট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ইব্রাহিম হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, মেয়র পদে প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করার লক্ষ্যে গত রোববার (২১ মে) বিকেলে পদত্যাগ করেন রাসিক মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। নতুন নির্বাচিত মেয়র দায়িত্ব না নেওয়া পর্যন্ত তার সব প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এ বি এম শরীফ উদ্দিনের ওপর। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম সাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
এরআগে ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত প্রথমবারের মত মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন খায়রুজ্জামান লিটন। এরপর মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপি নেতা মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। তারপর দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।