স্মৃতি বিজড়িত পীরগাছার নাপাই চন্ডিপুরে মোঘল আমলে নির্মাণ করা তিন গম্ভুজ বিশিষ্ট এক কাতার মসজিদটি দখল মুক্ত করা হয়েছে। দীর্ঘদিন মামলা-মোকাদ্দার পর অবশেষে গত এক সপ্তাহ থেকে মসজিদ প্রাঙ্গণে ওয়াক্তি নামাজ আদায় শুরু করছেন স্থানীয় মুসুল্লিরা। প্রায় ২৪০ বছরের প্রাচীন মোঘল আমলের এ মসজিদটি একটি প্রভাবশালী মহল দীর্ঘদিন নিজেরা ভোগদখল করে আসছিলো। অবশেষে মামলা-মোকাদ্দমার রায় ‘পীরপাল গাজী সাহেবের মসজিদ’ নামে স্থানীয় মুসুল্লিদের পক্ষে দেয়া হলে গত এক সপ্তাহ থেকে তারা জরাজীর্ণ তিন গম্ভুজ বিশিষ্ট এক কাতার মসজিদটির সামনে টিনের চালা তুলে আনুষ্ঠানিকভাবে নামাজ আদায় শুরু করেন। এতে করে সাধারন মুসুল্লিদের মাঝে উৎফুল্ল দেখা গেছে।
ইতিহাস থেকে দেখা গেছে, দেবী চৌধুরাণীর স্মৃতি বিজড়িত চন্ডিপুরেই মোঘল আমলে নির্মাণ করা হয়েছিল একটি ছোট্র তিন গম্ভুজ বিশিষ্ট মসজিদ। মসজিদের দেয়ালের আস্তরণ খসে পড়েছে অনেক আগেই। দেয়াল ভেদ করে গজিয়ে উঠেছে গাছ-গাছালি আর লতাপাতা। ওপরের বিশাল আকৃতির তিন গম্বুজে ফাটল ধরেছে। ইতোমধ্যে চারপাশের চারটি মিনার ধ্বসে পড়েছে। কালের পরিক্রমায় ঐতিহাসিক স্মৃতি বিজড়িত মসজিদটি সংস্কার বা সংরক্ষণ করা হয়নি। উল্টো জোরপূর্বক পীরপাল গাজী সাহবের জমিজমা দখল করে ভোগদখল করছেন একটি প্রভাবশালী মহল। সম্প্রতি সহকারি জজ আদালত বদরগঞ্জ, রংপুরের সহকারি জজ ফাইরুজ তাসনীম চন্ডিপুর পীরপাল গাজী সাহেবের মসজিদ কমিটির পক্ষে রায় প্রদান করেন।
বৃহস্পতিবার মসজিদ প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা এক কাতার মসজিদটির সামনে টিনের চালা তুলে মাটি কেটে মসজিদ তৈরি করছেন স্থানীয় লোকজন। সামনে বসানো হয়েছে নলকূপ। ১৫ থেকে ২০ মুসুল্লি একত্রে নামাজ আদায় করছেন। সকলের এক কথা ২৪০ বছর পর এই স্থানে নামাজ আদায় করা হলো। এতে একটি মসজিদের জায়গা উদ্ধার হলো।
মসজিদ কমিটি সভাপতি আবদুল গোফ্ফার মিয়া বলেন, ইতিহাস কখনো মুছে যায় না। ইতিহাস ঘাটতে সব জানা সম্ভব। মোঘল আমলে যে এখানে মানুষ নামাজ আদায় করতো তা আজ প্রমান হয়েছে। আমরা মসজিদের পক্ষে রায় পেয়েছি। এখন মুসুল্লিরা এখানে ওয়াক্তি নামাজ আদায় করবেন। সে জন্য সব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এসময় সাধারন সম্পাদক বাদশা আলম, সদস্য মিলন মিয়া, আবদুল মালেক বলেন, গ্রামের সব লোক মসজিদের পক্ষে। তারাও চাচ্ছিলেন মসজিদের জায়গা দখল মুক্ত হোক। আমরা এ নিয়ে অনেক ঘোরাঘুরি করে আদালতের রায় পেয়েছি। আজ আমরা স্বার্থক। আমরা চাই সকল ভেদাভেদ ভুলে এই মসজিদটি একটি পুণাঙ্গ রুপ পাক। এজন্য আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।