আজ (শনিবার) প্রসুতি দিবস। যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার প্রসুতি মায়েদের অভিভাবকেরা তাদের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালের চেয়ে বেসরকারি ক্লিনিকেই ঝুঁকে পড়েছেন। এর অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা গেছে সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারদের দুর্ব্যবহার। পাশাপাশি বেসরকারি ক্লিনিক গুলো স্বাস্থ্যসেবার মান ভালো না হলেও তাদের ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে প্রসুতি মায়েরা সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
শুক্রবার দুপুর দুইটার দিকে যশোরের ঝিকরগাছার সরকারি হাসপাতাল এবং একটি ক্লিনিক ঘুরে সরজমিনে দেখা গেছে, সরকারি হাসপাতালের চেয়ে প্রসুতি মায়েরা বেসরকারি ক্লিনিকগুলোতেই বেশি চিকিৎসা সেবা নিতে যাচ্ছেন। এর অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা গেছে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের দুর্ব্যবহারের কারণে তারা বেসরকারি ক্লিনিগুলোতে স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছেন। নিজের নাম পরিচয় দিয়ে (শুক্রবার দুপুর ২ টায়) ঝিকরগাছা সরকারি হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার শান্তার কাছে গাইনি ডাক্তারের মোবাইল নম্বর চাওয়া হয়। অত্যন্ত রুঢ় ভাষায় তিনি বলেন, ডাক্তারের মোবাইল নম্বর দেয়া নিষেধ আছে। আমি দিতে পারবো না। গাইনি রোগীদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সাফ জানিয়ে দেন এসব আমি বলতে পারছি না।
একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, মে মাসের গতকাল (২৬ মে) পর্যন্ত ঝিকরগাছা হাসপাতালে ২৫ জন নরমাল ডেলিভারি রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে সিজারিয়ান রোগীর সংখ্যা জানা যায়নি।
ঝিকরগাছা হাসপাতালে সিজার করতে আসা রোগীনী রিপা খাতুন (২০) জানান, আমি মনিরামপুরের খেদাপাড়া ইউনিয়নের শৈলী গ্রাম থেকে এখানে আসছি। অপারেশন করে আমার বাচ্চা হয়েছে। সেবার মান ভালো।
ফাতেমা ক্লিনিকে প্রসূতির চিকিৎসা নিতে আসেন ঝিকরগাছার গদখালি ইউনিয়নের মামুন হোসেনের স্ত্রী বর্ষা খাতুন (১৯)। বর্ষা খাতুনের শশুর আতর আলী গাজী জানান, সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারদের কথাবার্তা ভালো না। তাই কষ্ট হলেও ৯ হাজার টাকা দিয়ে এখানে বৌমার সিজার করিয়েছি।
ঝিকরগাছা সরকারি হাসপাতালের গাইনি ডাক্তার আঞ্জুমান আরা ইলোরা জানান, প্রতিমাসে হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারি এবং সিজারিয়ান রোগী প্রায় ২৫ জন করে চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন জানান, গরিব দুস্থ রোগীদের জন্য সরকার অর্থনৈতিক সহযোগিতার ব্যবস্থা রেখেছে।
সরকারি হাসপাতালে ডাক্তারদের আচরণগত ত্রুটি থাকায় সরকারি স্বাস্থ্যসেবা থেকে বিমুখ হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মহলের দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন রয়েছে।
ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার রশিদুল আলমের ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।