আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তিন মেয়াদকালের ১৪ বছরে দেশে একজন মানুষও না খেয়ে মারা যাননি বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ২০০৬-০৮ সালে দেশে দুর্ভিক্ষ হতো। উত্তরবঙ্গে অনেক মানুষ না খেয়ে মারা যেতেন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত ১৪ বছরে একজন মানুষও না খেয়ে মারা যাননি। আপনাদের (সাংবাদিক) নিউজেও এমন তথ্য দেখিনি। অথচ একটা সময় প্রতি বছর নভেম্বর ৮-১০ জন না খেয়ে মারা যেতেন। শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) অর্থ মন্ত্রণালয় আয়োজিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, আমরা খাদ্যবান্ধব নানা কর্মসূচি করছি। এক কোটি পরিবারকে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল দিচ্ছি। টিসিবির মাধ্যমে তেল-চিনি দেওয়া হচ্ছে। বাজেটের পরও চলমান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। একজন মানুষও যেন কষ্ট না পান, সেই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার, ইআরডি সচিব শরিফা খান প্রমুখ।
এদিকে আজ শুক্রবার সকালে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রাণী ভবানী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, আওয়ামী লীগ মোটেই বিচলিত নয়, কোনো স্যাংশন দিয়ে উন্নয়ন ব্যাহত করতে পারবে না। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ব্যাহত করতে পারবে না। আপনারা যত ধরনের স্যাংশনই দেন তা মোকাবিলা করার মতো যোগ্যতা বাংলাদেশের আছে। তিনি বলেন, এই বছরের বাজেটে কৃষিকে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি। বিনামূল্যে না হলেও অনেক কম মূল্যে কৃষির বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কম্বাইন্ড হারভেস্টার আমরা দিচ্ছি। গ্রামীণ ও পল্লী মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করার জন্য এই বাজেটকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাজেট বিষয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা গত ১৪ বছর ধরেই বলেন, এটা উচ্চাভিলাষী বাজেট, অবাস্তব বাজেট, কল্পনাভিত্তিক বাজেট। কল্পনাভিত্তিক বাজেট হলে পাঁচ লাখেরও কম চার লাখ ৮৪ হাজার কোটি টাকা জাতীয় আয় ৪৪ লাখ হতো না। প্রতি বছরই আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ ও আধুনিক বাংলাদেশ করার লক্ষ্য নিয়ে বাজেট দিয়েছি। সেই লক্ষ্যে অদম্য গতিতে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বিদেশি বিভিন্ন পত্র পত্রিকা বলে অদম্য বাংলাদেশ। সেই অদম্য বাংলাদেশে অপ্রতিরোধ্য গতি আমরা আরও বেগবান করবো। আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে। বিরোধী দলকে উদ্দেশ্য করে আবদুর রাজ্জাক বলেন, বিরোধী দল বলে শেখ হাসিনা উচ্চ বিলাসী। বাংলাদেশের মানুষকে আরও উন্নত করতে চায়। আমরা বলছি, এই বাজেট বাস্তবসম্মত। অতীতেও আমরা সফল হয়েছি, আগামী দিনেও এই বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সফল হবো। আগামী বছর এ বাজেট আরও বেশি হবে। বাংলাদেশের আয় আমরা নয় গুণ বৃদ্ধি করেছি। এই বাজেট প্রণয়ন হলে এটি আরও বাড়বে। মধুপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন পৌর মেয়র সিদ্দিক খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার শফি উদ্দিন মনি ও সাবেক পৌর মেয়র মাসুদ পারভেজ। এ ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে ১০০ জন ডাক্তার দিনব্যাপী প্রায় ১০ হাজারের মতো রোগীকে সেবা দেবেন।