পাবনার সুজানগরে এক সময়ের অতি জনপ্রিয় বেত ও বাঁশ শিল্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে এলাকা থেকে দিনের পর দিন বেত ও বাঁশঝাড় উজার হয়ে যাওয়ায় এই শিল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে।
উপজেলার মানিকহাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জানান, একসময় উপজেলার গ্রাম-গঞ্জের প্রতিটি বাড়িতে প্রচুর পরিমাণে বেত ও বাঁশঝাড় দেখা যেতো। এসব বেত ও বাঁশঝাড় কখনও প্রাকৃতিকভাবে আবার কখনও ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তোলা হতো। ওই সময় উপজেলার প্রায় ২শতাধিক পরিবার বাঁশ ও বেতের আসবাবপত্র তৈরী করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গ্রাম-গঞ্জে তাদের তৈরী বাঁশ ও বেতের দাঁড়িপাল্লা, ধান-চাল ওজন করা কাঠা, ধামা, ঝুড়ি, ডালি, টোবা, খাঁচি, কুলা, চালন ও দোলনাসহ বিভিন্ন আসবাবপত্রের ব্যাপক চাহিদা ছিল। তাছাড়া সে সময় বিত্তবান এবং অভিজাত পরিবারে বেতের তৈরী চেয়ার, টেবিল সোফাসেট এমনকি খাট-পালংও শোভা পেতো। মানিকদীর গ্রামের বেতশিল্পী নুয়াই নিশি জানান, আধুনীক এবং বিজ্ঞানের উন্নত প্রযুক্তির এই যুগেও বাঁশ ও বেতের তৈরী জিনিষের যথেষ্ট কদর রয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় পরিচর্যা এবং রক্ষণা-বেক্ষণের অভাবে বাঁশ ও বেতঝাড় উজার হয়ে যাওয়ায় তারা চাহিদামত বাঁশ ও বেতের আসবাবপত্র তৈরী করতে পারছেনা। এতে বাঁশ ও বেতশিল্পীরা দিনের পর দিন বেকার হয়ে পড়ছেন। এ অবস্থায় অনেকেই পৈতৃক পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন বলেও তিনি জানান। তবে এখনও এদের মধ্যে ২/৪জন গ্রাম-গঞ্জ ঘুরে বাঁশ ও বেত সংগ্রহ করে আবার কেউবা দূর থেকে কিনে এনে পৈতৃক পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন।