আসন্ন ২১ জুন রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচন উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত ও ১৪ দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। ‘উন্নয়ন দৃশ্যমান, এবার হবে কর্মসংস্থান’ স্লোগানকে সামনে রেখে ১০ খাতে ১০৫ দফার উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে শনিবার (৩ জুন) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে এই নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও দুইবারের সাবেক এই মেয়র বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এখন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছি। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে চাই। এমডিজি, এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে এবার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে। আপনারা আরো জানেন যে, সারা বিশ্বে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যাত্রা আরম্ভ হয়েছে। সুতরাং বিশ্বজনীন দক্ষ নাগরিক গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি। আমার স্বপ্ন আমার জন্মশহর ও শহরের মানুষকে নিয়ে। একজন মেয়র হিসেবে আপনারা আমাকে দায়িত্ব দেয়ার পর প্রধানমন্ত্রী রাজশাহীর মানুষের উন্নয়নের জন্য প্রায় ২৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেন। এই নগরীর সমৃদ্ধির জন্য শতাধিক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। নগরীর সড়ক বর্ধিতকরণ, সৌন্দর্যবর্ধন, নাগরিক পরিসেবা নিশ্চিতকরণ, পরিচ্ছন্নতা ও সবুজায়নসহ শিক্ষা, চিকিৎসা, অনগ্রসর জনসমষ্টির জন্য বিশেষ প্রণোদনা প্রদান, নতুন নতুন স্থাপনা প্রতিষ্ঠা, কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে নতুন নতুন ক্ষেত্র প্রস্তুত করাসহ সকল কার্যক্রমে সুশাসন নিশ্চিত করে আপনাদের অধিকতর সেবা প্রদানে আমি সর্বদা সচেষ্ট থেকেছি। এবার নির্বাচনে তাই আমার ঘোষণা - ‘উন্নয়ন দৃশ্যমান, এবার হবে কর্মসংস্থান’। ক্রমবর্ধমান এই শহরের নাগরিক সুবিধা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা এবার আমার লক্ষ্য ও অঙ্গীকার। পরিবেশবান্ধব, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সুশাসনসমৃদ্ধ একটি মহানগর গড়ে তোলা আমার স্বপ্ন। তাই উন্নয়নের গতি অব্যাহত রাখতে নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা প্রয়োজন।
করোনা ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিকুলতার মধ্যে আগের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রায় ৬০ শতাশং বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করে লিটন এবার যেসব প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরেছেন সেগুলো হচ্ছে- ব্যাপক কর্মসংস্থান ও রাসিকের আয়তন বৃদ্ধি, দক্ষমানবসম্পদ সৃষ্টির জন্য শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা, শিল্প-ব্যবসা বাণিজ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অবকাঠামো উন্নয়ন, ক্রীড়া-সংস্কৃতি ও মননচর্চার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক উদ্যোগ, প্রতিবন্ধী ও অনগ্রসর শ্রেণির মানুষের উন্নয়ন প্রণোদনা, মুক্তিযুদ্ধ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ, প্রবীণ ও শিশুদের জন্য বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা, সামাজিক সুরক্ষা ও নারী উন্নয়ন, পরিবেশ উন্নয়ন ও স্বীকৃতি অর্জন, পরিচ্ছন্নতা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, ধর্মীয় অবকাঠামো উন্নয়ন, বিনোদনকেন্দ্রের উন্নয়ন, শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান, আর্তমানবতার সেবা ছাড়াও আরও অনেক বিষয়ের উন্নয়ন কার্যক্রম।
ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠান মঞ্চে অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য প্রফেসর ড. আবদুল খালেক, কেন্দ্রীয় সদস্য বেগম আখতার জাহান, রাজশাহী মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অনিল কুমার সরকার, মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন প্রামানিক, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নওশের আলী, অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, ডা. তবিবুর রহমান শেখ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী, ক্রীড়া সহ নগরীর গুরত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। ইশতেহার ঘোষণা শেষে আওয়ামী লীগ মনোনীত ও ১৪ দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।