বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহেদ বখত ময়নু' র লেখা 'আমার মুক্তিযুদ্ধ' গ্রন্থের পাঠক উৎসব ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৯ মে শুক্রবার বিকাল ৪ টায় চাঁদনীঘাট মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে ভবনে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। আমার মুক্তিযুদ্ধ গ্রন্থের সম্পাদক মহসীন বখতের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম। অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম, বিশেষ আলোচক ছিলেন অধ্যাপক ড. নাঈমা খানম, অধ্যাপক ড. সেলু বাছিত। রাজনগর সংগীত একাডেমির জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মাধ্য দিয়ে অনুষ্টানের সুচনা হয়। পরে স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার, নিউক্লিয়াস এর প্রতিষ্ঠাতা সিরাজুল আলম খান দাদা ভাই'র মৃত্যুতে শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। নীলা নাগ স্মৃতি পরিষদের সম্পাদক খছরু চৌধুরীর সঞ্চালনায় ওই অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহসীন বখত। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মাহমুদুর রহমান, প্রবীন রাজনীতিবিদ অপূর্ব কান্তি ধর, বীর মুক্তিযোদ্ধা জামাল উদ্দিন, রাজনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মিলন বখত, জেলা আইনজীবী সমিতি ও লীলা নাগ স্মৃতি পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট রমা কান্ত দাশ গুপ্ত, রাজনগর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তি চক্রবর্তী, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক আকমল হোসেন নিপু, ডাঃ বিনেন্দু ভৌমিক, আহমদ সিরাজ, অবঃ অধ্যক্ষ ড. ফজলুল আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা সজল চক্রবর্তী, কবি সৌমিত্র দেব, মনু থিয়েটারের আ স ম ছালেহ সুহেল, রাজনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি আউয়াল কালাম বেগ প্রমুখ।
কয়েক দিনের তাপদাহ তীব্র গরম উপেক্ষা করে আমন্ত্রিত সুধিজনের পদভারে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে ভবন। উপস্থিত ছিলেন সাহিত্যিক ছড়াকার আবদুল হামিদ মাহবুব, ডাঃ অঞ্জন ভৌমিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফখরুল ইসলাম, রাজনগর সরকারি কলেজ এর অধ্যক্ষ রজত গোস্বামী, মৌলানা মুফজ্জল হোসেন মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ তোফায়েল আহমদ, পংকজ দেব, জেলা মহিলা যুব লীগ এর সভাপতি পারভীন আক্তার, রাজনগর উপজেলা জাসদ সম্পাদক মোস্তাক চৌধুরী, জেলা জাসদ নেতা হোসেন আহমদ রাজা, রাজনগর পুঁজা উদযাপন পরিষদ এর সভাপতি কবি অসিত দেব, সম্পাদক শ্রীপদ বৈদ্য, শনন এর বিজিত দেব, শিক্ষক বিজয় দেব, কবি জাবেদ ভূঁইয়া সহ শিক্ষক, সাংবাদিক বিভিন্ন শ্রেণি পেশার সম্মানিত পাঠকবৃন্দ। পাঠক উৎসবের আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন "আমার মুক্তিযুদ্ধ " গ্রন্তে মহান স্বাধীনতা নিয়ে একজন মুক্তিযুদ্ধার আকাক্সক্ষা মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস উপস্থাপন করা হয়েছে। যা বাস্তবিক অর্থে ইতিহাস বিকৃত কারীদের কারণে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ থেকেদূরে সরে গেছে বাংলাদেশ। বক্তারা আরো বলেন একজন জীবিত মুক্তিযুদ্ধা 'আব্দুল হান্নান'কে ভুল ক্রমে মৃত/শহীদ মুক্তিযুদ্ধার তালিকাভূক্ত করা হয়েছে - স্বাধীনতার এতবছর প'রে এসেও এটা যখন সংশোধন হয়না, তখন বুঝতে হবে কত জঘন্য অবস্থায় আছি আমরা? কত নীচে নেমে গেছে আমাদের মানসিকতা? লেখকের আক্ষেপ কত যে সঠিক! এর থেকে বেড়িয়ে আসতে হলে রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল স্তরে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। শাহেদ বখত ময়নু'র 'আমার মুক্তিযুদ্ধ' গ্রন্থখানি আমাদেরকে সেই পথই দেখিয়ে দেয়, আমাদের চেতনা আরেকবার শানিত করে দেয়, বিবেক জাগ্রত করে দেয়। নানা সীমাবদ্ধতা মেনে নিয়েও বলা, এ গ্রন্থখানি হচ্ছে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের এক অনবদ্য দলিল।