বর্তমানে বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু আয়ের পরিমাণ ২৭৬৫ মার্কিন ডলার। এ তথ্য জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আজ রোববার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেনের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে এ তথ্য জানান তিনি। অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু আয়ের পরিমাণ ২৭৬৫ মার্কিন ডলার। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে এটি ছিল ৬৮৬ মার্কিন ডলার। তিনি বলেন, সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার মাধ্যমে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি করা। সে লক্ষ্যে সরকার স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এ সময় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। রোববারের প্রশ্নউত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুলের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে চলতি বছর ৬ জুন পর্যন্ত দেশে আয়কর দাতার সংখ্যা ৮৯ লাখ বলে জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে ব্যক্তি পর্যায়ে করদাতার সংখ্যা ৮৯,০৬,৫৩৯ (ঊননব্বই লাখ ছত্রিশ হাজার পাঁচশত ছত্রিশ) জন (০৬ জুন, ২০২৩ পর্যন্ত)। তিনি বলেন, ব্যক্তি করদাতার সংখ্যা বাড়ানোর জন্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পদক্ষেপগুলো হলো, জরিপ কার্যক্রমের মাধ্যমে নতুন করদাতা সনাক্তকরণ, এক পাতার রিটার্ন দাখিল পদ্ধতি সহজীকরণ, স্পট অ্যাসেসমেন্ট, অনলাইন ই-রিটার্ন দাখিল, আয়কর দেওয়া সহজীকরণ, যেমন- অনলাইনে আয়কর দেওয়ার জন্য এ চালান, রকেট, নগদ, বিকাশ এবং সোনালি ব্যাংক ই-পেমেন্টের মাধ্যমে পরিশোধ ব্যবস্থা চালু, করদাতাদের সম্মাননা দেওয়া। যেমন- সিটি করপোরেশন ও জেলা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ও দীর্ঘ সময়ব্যাপী কর পরিশোধকারী করদাতাকে জাতীয়ভাবে সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে, নভেম্বর মাসে কর তথ্য সেবা মাস চালুকরণ, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে; এবং কর তথা সেবা দেওয়া কেন্দ্রের মাধ্যমে করদাতাদের রিটার্ন পূরণসহ সামগ্রিক সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এই পদক্ষেপগুলোর ফলে উত্তরোত্তর ব্যক্তি পর্যায়ে করদাতারা কর দেওয়ায় আগ্রহী হচ্ছেন এবং করদাতার সংখ্যাও বৃদ্ধি পাঁচ্ছে। আওয়ামী লীগের সদস্য মোরশেদ আলমের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে অর্থমন্ত্রী জানান, মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে এ পর্যন্ত ১৫টি মামলা হয়েছে, এর সঙ্গে জড়িত রাজস্বের পরিমাণ ৩৬৭ দশমিক ৫৫ কোটি টাকা। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বিদেশে অর্থ পাঁচার ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধকল্পে বর্তমানে দেশে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ কার্যকর রয়েছে, যা প্রয়োজনের নিরিখে ২০১৫ সালে আংশিক সংশোধন করা হয়। ২০১৫ সালের সংশোধিত আইনানুযায়ী, বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশের সিআইডি বিভাগ পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে অর্থ পাঁচার প্রতিরোধে কাজ করে থাকে। এর মধ্যে বৈদেশিক বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্থপাঁচার সংশ্লিষ্ট মানি লন্ডারিং মামলাগুলোর ক্ষেত্রে জাতীয় রাজ বোর্ডের অধীনস্থ দপ্তরগুলো কর্তৃক অনুসন্ধান ক্রমে মামলা ও তদন্ত পরিচালনা করা হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর কর্তৃক বন্ডের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত অভিযোগের বিপরীতে এ পর্যন্ত ১৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত রাজস্বের পরিমাণ ৩৬৭ দশমিক ৫৫ কোটি টাকা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড মানিলন্ডারিং আইন অর্থপাঁচার প্রতিরোধে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে এবং এ বিষয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বাড়ানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।