আওয়ামী লীগ কর্মী ও সমর্থকদের বেধড়ক পিটুনি খেয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের হাতপাখা মার্কার মেয়র প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম সরকারের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। হুঁশিয়ারিতে তিনি বলেন, আমার গায়ে হাত দিয়েছে, রক্তাক্ত করেছে। নির্বাচন শেষ হোক, যে রাস্তায় আমার রক্ত ঝড়েছে, আওয়ামী লীগের পতন না ঘটানো পর্যন্ত আমি সেই রাস্তা ছাড়বো না। আমি মরি আর বাঁচি, এ সরকারের পতন ঘটাবো।
সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, রির্টানিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের উদ্দেশে রওনা দিয়ে হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা এলাকায় পৌঁছলে শুনতে পাই হাতপাখার কর্মীদের নৌকার সমর্থকরা সরিয়ে দিচ্ছে। তখন আমি গাড়ি থেকে ওইস্থানে নামলে আমাকে ঘিরে ধরে নৌকার সমর্থকরা তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে ঘুষি দেওয়া শুরু করে। তিনি আরও বলেন, আমি ওদের বাবার বয়সের আলেম মানুষ। এত নিকৃষ্ট, এত জানোয়ার ও পিশাচ হতে পারে মানুষ! বাবা সমতুল্য ব্যক্তিকেও আঘাত করবে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও হাতপাখার সমর্থক আল মামুন বলেন, বিনা উসকানিতে আমাদের মেয়র প্রার্থীর ওপর স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। সোমবার দুপুরে হাতপাখা মার্কার প্রার্থীর বরাত দিয়ে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মিডিয়া উপ-কমিটির সদস্য কে.এম শরীয়াতউল্লাহ জানান, ছাবেরা খাতুন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে বের হওয়ার পর হাতেম আলী কলেজ চৌমাথার কাছে ৩০/৪০ জন নৌকার সমর্থক প্রার্থীর ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন। এ সময় হামলাকারীরা লাঠিসোঁটা ও পাথর ব্যবহার করেন। এতে প্রার্থীসহ তার সাথে থাকা বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়। তবে প্রার্থী তার সাথে থাকা কর্মীদের উত্তেজিত হতে দেননি। সবাইকে নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এর আগে হাতপাখা মার্কার প্রার্থী ফয়জুল করীম অভিযোগ করে বলেন, নগরীর ২ নম্বর ওয়ার্ডের এ কাদের চৌধুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রবেশকালে হাতপাখার কর্মীরা মারধরের শিকার হন। এ সময় কর্মীদের রক্ষা করতে গিয়ে তিনি লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, কাউনিয়ার একটি ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখতে পাই মামা খোকনকে (রফিকুল ইসলাম খোকন) বুথের মধ্যে ঢুকে একজন ভোটারকে প্রভাবিত করতে। ওইসময় আমি প্রতিবাদ করায় মামা খোকন আমার হাত ধরে টেনে লাঞ্ছিত করে।
অপরদিকে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হাতপাখা মার্কার মেয়র প্রার্থীর ওপর হামলা খবর পেয়ে সোমবার দুপুরের পর থেকে চরমোনাই থেকে তার অনুসারী বহিরাগতরা দলে দলে নগরীতে প্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের হাতে লাঠিসোঁটা দেখা গেছে। এ ঘটনায় নগরীজুড়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আবদুর রব সেরনিয়াবাত সেতুতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে। এমনকি নগরীর বেলতলা খেয়াঘাট আটকে দেওয়া হয়েছে। এদিকে নৌকার মেয়র প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত বিকেল চারটার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেছেন, কতিপয় ব্যক্তি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। নৌকার প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট আফজালুল করিম অভিযোগ করেন, হাতপাখার কর্মীরা লাঠিসোঁটা ও তলোয়ার নিয়ে নগরীতে ঢুকে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছে। এ ঘটনায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।