”শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনায় পারদর্শি, দল চালাতে পারদর্শি নয়” রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক নুরুল আমিন রাজার এমন মন্তব্যে ফুঁসে উঠেছে পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সকল সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। ভারপ্রাপ্ত সভাপতিকে নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনার এখন ঝড় বইছে সর্বত্র। গত ১১ জুন রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও পৌর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশ পরিচালনায় পারদর্শি, দল চালাতে পারদর্শি নয়, এমনকি প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি বিভাগে সাংগঠনিক সম্পাদক নিযুক্ত করলেও তারা আজ অবধি পীরগঞ্জে কেউ আসেনি। আবার সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ-যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের টাকা দিয়ে রংপুরে আনতে হয়। সে সময়ে আলোচনা সভায় উপস্থিত জাতীয় পরিষদের সদস্য খলিলুর রহমান মন্ডল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহিদুল ইসলাম পিন্টু, রবিউল ইসলাম রবি, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক সাংবাদিক সরওয়ার জাহান সভাপতির বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন। এ সময় শাহিদুল ইসলাম পিন্টুর সাথে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির বাকবিতন্ডা সৃষ্টির একপর্যায়ে হাতাহাতির উপক্রম হয়। এ সময় সিনিয়র নেতা জাতীয় পরিষদের সদস্য খলিলুর রহমান মন্ডলের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরদিন উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে উপজেলার সর্বত্র। এ প্রসঙ্গে আলোচনা সভায় উপস্থিত সহ-সভাপতি শাহিদুল ইসলাম পিন্টু জানান, দলীয় সভানেত্রী সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্যের প্রতিবাদ করেছি, বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের অবহিত করেছি। উপস্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের অপর সহসভাপতি রবিউল ইসলাম রবি জানান, তার এমন মন্তব্যে আমরা ক্ষুদ্ধ, দলীয় সাধারণ সম্পাদক তাজিমুল ইসলাম শামীম দেশের বাইরে। সেক্রেটারী ফিরে আসলে জরুরী সভায় কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক সাংবাদিক সরওয়ার জাহান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান বাবলু, ছাত্রলীগের সভাপতি আল মামুন কাওসার রতন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা আওয়ামী লীগের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের অপর সহ-সভাপতি আলহাজ¦ মকবুল হোসেন সরদার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ খলিলুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউর রহমান মন্ডল মিলন জানান, রাজা সাহেব ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর জাতীয় পার্টি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), অত:পর শাহ আবদুর রউফ কলেজে বাংলা বিষয়ে প্রভাষকের চাকুরি প্রাপ্তিতে এরশাদের হাত ধরে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন। দলীয় সভানেত্রী সম্পর্কে মন্তব্য করার যোগ্যতা তার নাই, আমরা তার পদত্যাগ দাবি করছি। উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুল আমিন রাজা জানান, একটি মহল আমার বক্তব্য বিকৃত করে সাংবাদিকদের উপস্থাপন করছে। আমি বলেছি প্রধানমন্ত্রী পৃথিবীর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী, সফল প্রধানমন্ত্রী, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে গন্ডগোলের সময়ে সংগঠনকে শক্তিশালি করা দরকার, তিনি বিভিন্ন কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন বিধায় দলে পর্যাপ্ত সময় দিতে পারছেন না, দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকরা সঠিক ভাবে কাজ করছেন না। জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক একেএম ছায়াদত হোসেন বকুল জানান, উনি যদি এমন মন্তব্য করে থাকেন, তাহলে অবশ্যই ভুল করেছেন, তিনি একজন সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতা। তবে আমার ধারনা উনি স্লিপ অফ টাং করে ফেলেছেন।