চাঁদপুর সদর উপজেলার ৬নং মৈশাদী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের উত্তর মৈশাদী গ্রামে বাইতুন নুর নামে একটি জামে মসজিদ কে ঘিরে চলছে নানা মুখি ষড়যন্ত্র, ১০ জুন শনিবার সন্ধা থেকে মসজিদের মেইন গেটে ঝুলছে তালা। জানা যায় মসজিদের জন্য ভূমি দানকারীদের পিতা মরহুম আহমদ খান ওপরে চাঁন খান নদী ভাঙ্গনের শিকার ছিলেন। সহায় সম্বল হারিয়ে পরিবারকে নিয়ে এখানে কিছু জমি ক্রয় করে বসবাস শুরু করেন।
এরপর থেকে দীর্ঘদিন ধরে বাড়ির রাস্তা ছিল না। এলাকার কিছু কুচক্রী মানুষ দ্বারা ভূমি দানকারী এবং তার পরিবারবর্গ রাস্তার জন্য সর্বদা লাঞ্ছিত হতো।ভূমি দানকারীদের পিতা মৃত্যুর পূর্বে সন্তান দেরকে ওসিয়ত করে যান যদি কোনোদিন বাড়ির রাস্তা হয় তাহলে তারা যেন একটি আল্লাহর ঘর মসজিদ নির্মাণ করে। ২০০৯ সালে চাঁন খানের মৃত্যুর পর ভূমি দানকারিগণ ব্যাক্তিগত উপার্জনের অর্থে ১৮ শতাংশের একটি পুকুর খরিদ করে ও ভরাট করে।
পিতার ওসিয়ত বাস্তবায়নে মোঃ নূরুল ইসলাম খান, হাফেজ মোঃ ফরিদুল ইসলাম মিজান, জয়নাল আবেদিন খান, মেয়ের জামাই মিজানুর ইসলাম তাদের ক্রয়কৃত জমির ৩ শতাংশ মসজিদের জন্য ওয়াকফা করে দেন। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ৪ তালা ফাউন্ডেশনের ১ তালা মসজিদ নির্মাণ সম্পন্ন হয়। মসজিদটি শুরু থেকে এলাকাবাসীর মধ্যে বাঘ বিতর্ক থাকলেও শেষ পর্যন্ত করোনা কালীন সময়েই মসজিদটি পাঞ্জেগানা মসজিদ হিসেবে যাত্রাশুরু হয়। গঠন করা হয় কমিটি, রাখা হয় জুম্মা ইমাম ও পাঞ্জেগানা ইমাম। মসজিদটি সুসজ্জিত করা হলেও নামাজের সময় ঠিক মত মুসল্লী পাওয়া যেত না। তাই জুম্মার ইমাম থাকলেও নেই এখন পাঞ্জেগানা ইমাম। বাইতুর নুর জামে মসজিদকে মুসল্লি শূন্য করতে এর একটু পশ্চিম দিকে এলাকাবাসী হাফিজ জাহানারা মসজিদ কমপ্লেক্স নামে একটি মসজিদ চলতি বছর ২১ এপ্রিল ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন আর সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন। অবশেষে আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। দীর্ঘ দিন প্রাকৃতিক দাবানল শেষে ৯ জুন শুক্রবার মুষলধারে বৃষ্টি আসে। ঐদিন মোঃ নুরুল ইসলাম খান তার ফুফা শ্বশুড় এর মৃত্যু খবর শুনে জানাজার জন্য কুমিল্লায় অবস্থান করে। তার জমি থেকে আসা ধান সিদ্ধ শেষে রৌদে শুকাবে পরিবারের লোকজন। কিন্তু টানা বৃষ্টির কারণে রৌদে শুকাতে না পেরে উপায়ন্ত না হয়ে মোঃ নুরুল ইসলাম খানের কিশোর ছেলে পারভেজ খান সন্ধায় ধানগুলো শুকাতে মসজিদে নিয়ে যায়।
এশায় সময় কোন মুসল্লি না থাকায় পারভেজ মসজিদে একাই নামাজ আদায় করে। পরের দিন শনিবার সাবেক সেনা সদস্য মোঃ নুরুল ইসলাম খান ও এলাকার ২ জন মাগরিবের নামাজ আদায় করে, নামাজের সালাম ফিরানোর পর কিছু দুষ্ট লোক মোঃ নুরুল ইসলাম খান কে হিন্দু, খ্রিষ্টান, ইহুদি সহ অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। এরপর এশা থেকে মসজিদের গেইটের তালার চাবি লাগানোর অংশ টুকু ভরাট করে নতুন আরো ২ টি তালা লাগিয়ে তাদের অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করে এবং সোস্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল করে। সচেতন মহলের দাবি নুরুল ইসলাম খানের ছেলে বুঝে হোক না বুঝে হোক মসজিদের ধান শুকাতে দিয়েছে, তাই বলে মসজিদ শনিবার থেকে তালা কেন? বাকী তালা গুলো কারা মেরেছে? কেন মেরেছে? সমস্যা থাকলে নিজেরা বসে সমাধান করোক। তাই বলে মসজিদ বন্ধ থাকবে কেন ? এ বিষয়ে নুরুল ইসলাম খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার অনুপস্থিতিতে আমার ছোট কিশোর ছেলের দ্বারা অজান্তে এই ভুলটা হয়েছে এটা সবাই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।কিন্তু দু,দিন টানা বৃষ্টি হওয়ার কারণে আমার ছেলে মসজিদের এক কোনে ধান গুলো মেলে দেয়। এলাকার কিছু লোক শনিবার এশার সময় মসজিদের গেটে ২ টা তালা লাগিয়ে দেয়। আমরা মসজিদ থেকে ধান বের করতে পারাচ্ছি না।
শনিবার থেকে মসজিদ বন্ধ। মসজিদের তালা খুলার জন্য আমি এলাকার মেম্বার ও চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েছি। চেয়ারম্যান মেম্বারদেরকে বলেছে। তারপরও কি কারণে মসজিদে তালা তা আমার জানা নেই। আমার দৃঢ় বিশ্বাস আমাদের জনবান্ধব চেয়ারম্যান সুষ্ঠু সমাধানের মাধ্যমে খুব দ্রুতই মসজিদের তালা খুলে দেয়ার ব্যবস্থা করবে।