বগুড়ায় চাইনিজ এবং ফাস্টফুড দোকানের আড়ালে চলছে অন্তরঙ্গ ডেটিং ও দৃষ্টিকটু কার্যকলাপ। বিভিন্ন মানে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে রেস্টুরেন্ট ও ফার্স্টফুড। আর এসব অধিকাংশ রেস্টুরেন্ট ও ফাস্টফুডের কাস্টমার হচ্ছে উঠতি বয়সী স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছেলে-মেয়ে। প্রশাসনের নাকের ডগায় এই অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে কতিপয় ব্যবসায়ীরা। প্রশাসনের নীরবতা ও অভিযান না থাকার কারণে বিপথে পরিচালিত হচ্ছে স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে বগুড়ায় গড়ে ওঠা চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ও নামিদামি পার্ক হলেও সেখানে যাওয়ার পরিবেশ নেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে। নিয়ন্ত্রণহীন অসংযত কার্যকলাপে একদিকে যেমন তরুণ-তরুণীদের নৈতিক অবক্ষয় ঘটছে অন্যদিকে নষ্ট হচ্ছে এলাকার পরিবেশ। ঘটছে নানা অপ্রীতিকর ঘটনা। তাছাড়া পার্কে ঘুরতে আসা সাধারণ মানুষরা পড়ছেন বিব্রতকর অবস্থায়।
সরেজমিনে পার্ক ও রেস্টুরেন্টগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, স্কুল ফাঁকি দিয়ে বসে আছে কিছু শিক্ষার্থীরা। রেস্টুরেন্টগুলো এসেছে তারা প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটাতেই। স্কুল-কলেজ বা প্রাইভেটে যাওয়ার নাম করে কি করছে সন্তানরা তা জানেন না বাবা-মা ও শিক্ষকেরা? বিভিন্ন রেস্টুরেন্টর কেবিনগুলিতে জোড়ায় জোড়ায় বসে আছে প্রেমিক-প্রেমিকা তারা সকলেই স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী। তাদের বয়স ১৪ থেকে ১৮ বছর। চলছে অন্তরঙ্গ ডেটিং এ দৃষ্টিকটুর কার্যকলাপ।
একাধিক সূত্র প্রতিবেদককে জানায়, অসামাজিক কাজের চাহিদা বেশি থাকায় বগুড়ার বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠছে মৃদু আলো ও ছোট ছোট কেবিন সম্বলিত অসংখ্য রেস্টুরেন্ট। পরিবার-পরিজনদের রেস্টুরেন্টে যাওয়ার কোনপ্রকার পরিবেশ নেই। নিরাপদে প্রিয়জনের সঙ্গে একান্ত সময় কাটাতেই রেস্টুরেন্টগুলোতে আসেন স্কুল পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীরা। নির্দিষ্ট সময়ের বেশি সময় রেস্টুরেন্ট গুলোতে অতিবাহিত করলে দিতে হয় ওয়েটিং বিল। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পার্ক ও রেস্টুরেন্টগুলোতে বসে থাকে তরুণ-তরুণীরা। কেউ কেউ প্রকাশ্যে অনৈতিক ও দৃষ্টিকটু কর্মকাণ্ডে লিপ্ত। এর মধ্যে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রয়েছে। স্কুল চলাকালীন কিংবা বিকেলে প্রাইভেট পড়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে প্রেমিকার সঙ্গে পার্কে বসে আড্ডা দেয় প্রেমিকরা।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর বগুড়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম তুহিন জানান, বগুড়ায় পার্ক ও রেস্টুরেন্টে অসামাজিক ও দৃষ্টিকটু কার্যকলাপ সম্পর্কে আমি অবগত আছি। এই বিষয়ে নিয়ে আমরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার সাথে আলোচনা করে বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষক ও অভিভাবকদের নিয়ে কাউন্সিল করব। পার্ক ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীদের সাথে বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা করবো স্কুলের পোশাক পরিহিত কোন ছাত্রছাত্রী যেন স্কুল চলাকালীন পার্ক ও রেস্টুরেন্টে না আসে। সব চেয়ে বড় বিষয় হলো অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে।
এ বিষয়ে বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ নূরে আলম সিদ্দিকী প্রতিবেদককে জানান, আমরা সোর্সের মাধ্যমে নজরদারিতে রেখেছি এইসব পার্ক ও রেস্টুরেন্টগুলোতে। এটা রোধে স্কুল কর্তৃপক্ষ, ব্যবসায়ি সমিতি ও অভিভাবকসহ সমাজের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। শুধু পুলিশের একার পক্ষে নজরদারি করলে এটা সমাধান হবে না।