গ্লেন্ডা জ্যাকসন পর্দা ও মঞ্চ দুটিতেই দাপিয়ে বেড়িয়েছেন সমানতালে। মাঝে পেশা বদল করে রাজনীতি করেছেন। পরে আবার পুরোনো ভালোবাসা অভিনয়ে ফিরে গেছেন। এই অভিনেত্রীর মুখপাত্র লিওনেল লার্নার এক বিবৃতিতে জানান, দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর গত বৃহস্পতিবার সকালে লন্ডনের ব্ল্যাকহেথে নিজ বাড়িতে মারা যান গ্লেন্ডা জ্যাকসন। এ সময় পরিবারের সদস্যরা তার পাশে ছিলেন। দীর্ঘ ছয় দশকের অভিনয়জীবনে গ্লেন্ডা জ্যাকসন দুটি অস্কার, তিনটি অ্যামি, দুটি বাফটা ও একটি টোনি অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন। ১৯৩৬ সালের ৯ মে উত্তর-পশ্চিম ইংল্যান্ডের বার্কেনহেডে জন্মগ্রহণ করেন গ্লেন্ডা। তিনি ওয়েস্ট কির্বি কাউন্টি বালিকা বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন এবং কিশোর বয়সে টাউনসওমেনের গিল্ড ড্রামা দলে অভিনয় করতেন। তিনি দুই বছর বুটস দ্য কেমিস্টের একটি শাখায় কাজ করেন। ১৯৫৪ সালে তিনি বৃত্তি পেয়ে রয়্যাল একাডেমি অব ড্রামাটিক আর্টে ভর্তি হন। ১৯৬০ থেকে সত্তরের দশকের সবচেয়ে বড় ব্রিটিশ তারকাদের একজন হয়ে উঠেছিলেন গ্লেন্ডা। পরপর দু-বছর অস্কার জিতেছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে ‘উইমেন ইন লাভ’-এর জন্য এবং ১৯৭৪ সালে ‘আ টাচ অব ক্লাস’ ছবির জন্য এই সম্মান পেয়েছিলেন। এরপর রাজনীতিতে আসেন গ্লেন্ডা। ১৯৯২ সালে সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করেন। তিনি লেবার পার্টির একজন আইনপ্রণেতা হিসেবে ২৩ বছর অতিবাহিত করেন। ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের প্রথম সরকারে পরিবহনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া ২০০৩ সালে ইরাক আক্রমণের জন্য ব্লেয়ারের সঙ্গে মতবিরোধে গিয়েছিলেন গ্লেন্ডা। ২০১৫ সালে পার্লামেন্ট ছেড়ে অভিনয়ে ফিরে আসেন গ্লেন্ডা। শেক্সপিয়রের নাটক ‘কিং লিয়ার’-এ তাকে দেখে মুগ্ধ হন নাট্যপ্রেমীরা। বিপুল জনপ্রিয় হয় সেই প্রযোজনা। থিয়েটার ছিল গ্লেন্ডার প্রাণ। তবে অভিনয়ে প্রত্যাবর্তনের পর সিনে পর্দায় এসেছিলেন একটু দেরিতেই। ২০১৯ সালে ‘এলিজাবেথ ইজ মিসিং’-এ প্রায় তিন দশক পর গ্লেন্ডাকে দেখা গিয়েছিল। আবারও পুরস্কৃত হন ‘বাফটা’ সম্মানে। লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিক এক টুইটে বলেন, ‘তিনি (গ্লেন্ডা জ্যাকসন) একজন শক্তিশালী রাজনীতিবিদ, একজন দুর্দান্ত অভিনেত্রী ও একজন ভালো পরামর্শদাতা ছিলেন। হ্যাম্পস্টেড ও কিলবার্ন আপনাকে স্মরণ করবে গ্লেন্ডা।’ সদ্য ‘দ্য গ্রেট এস্কেপার’ ছবির শুটিং শেষ করেছিলেন অভিনেত্রী। মাইকেল কেন ছিলেন তার সহ-অভিনেতা। ছবির মুক্তি আর দেখে যাওয়া হলো না গ্লেন্ডার। বর্ষীয়ান এই অভিনেত্রীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন বিনোদন এবং রাজনীতি জগতের সহকর্মীরা।