মৌলভীবাজারে বহুল প্রত্যাশিত মনু নদীর উপর কুলাউড়া-রাজাপুর পিসি গার্ডার সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় ৯৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটির সুফল পাচ্ছেন না স্থানীয়রা। এতে যাতায়াত ক্ষেত্রে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন কুলাউড়া ও পাশর্^বর্তী কমলগঞ্জ উপজেলার প্রায় ২ লাখ লোক। তবে জমি অধিগ্রহণ সমস্যার সমাধান করে দ্রুত সেতুটি চালুর আশ্বাস দিয়েছে জেলা প্রশাসন। মনু নদী বেষ্টিত কুলাউড়ার হাজিপুর, পৃথিমপাশা, শরীফপুর ও টিলাগাঁওসহ সাতটি ইউনিয়নে দেড় লাখেরও বেশি মানুষের বসবাস। তবে এ নদীতে কোনো সেতু না থাকয় যুগের পর যুগ যাতায়াত ক্ষেত্রে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে এ অঞ্চলের লোকজনের। উপজেলা শহরে প্রযয়োজনীয় কাজে যেতে গেলে এসব ইউনিয়নের লোকজনকে অনেক পথ ঘুরে যেতে হয় কুলাউড়া উপজেলায়। আবার কাজ শেষে বাডতি ফিরতে পথেই অনেক সময় রাত হয়।
পাশের উপজেলা কমলগঞ্জের লোকজনও এ উপজেলায় আসতে গেলে একই সমস্যার সম্মুখীন হয়। আর একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের ক্ষেত্রেও রয়েছে চরম বিড়ম্বনা। এসব সমস্যা থেকে রেহাই পেতে এবং কুলাউড়া চাতলাপুর চেকপোস্ট ব্যবহারের মাধ্যমে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানির লক্ষ্যে শরীফপুর সড়কে ২৩৩ মিটার রাজাপুর পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এ সেতুর দুপাশে সাড়ে সাত কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণে নদীর উভয় তীরে ৪৫ একর জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়।
একনেক ২০১৮ সালে অনুমোদনের পরই জন জেবী ও জামিল ইকবাল - এ দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতু নির্মাণের কাজ পায়। ২০২২ সালে শেষ হয় রাজাপুর পিসি গার্ডার সেতুর শতভাগ নির্মাণ কাজ। সংযোগ সড়কের ২১ একর জমি অধিগ্রহণ করা গেলেও এর প্রক্রিয়া শেষ হয়নি বাকি ২৪ একরের। এতে সেতুর দুপাশের সাড়ে সাত কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। শুধু তাই না, জমি অধিগ্রহণের টাকা নিয়েও জটিলতার অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা। এসব সমস্যার দ্রুত সমাধান করে সেতু চালুর দাবি এলাকাবাসীর।
সড়ক বিভাগের প্রকৌশলী মো. জিয়া উদ্দিন জানান, সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণের ২৪ একর জমি ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধিগ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম জানান, শ্রীঘ্রই সেতুটি চালু হবে। উভয় তীরে সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের জমি অধিগ্রহণের টাকা ইতোমধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে। তৃতীয় ধাপে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে অধিগ্রহণ শেষ হলে এ টাকাও দ্রুত জমির প্রকৃত মালিকদেরকে দেয়া হবে।