চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের মেঘনা নদীর পশ্চিমে বাহাদুরপুর গ্রামে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের গোলাগুলিতে মোবারক হোসেন বাবু (৪৮) নামে ব্যাক্তি নিহত এবং ৭ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় উপজেলার মোহনপুর ইউপি চেয়ারম্যান কাজী মিজানুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
রোববার (১৮জুন) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে মোহনপুর ইউনিয়নের কাজী বাড়ী থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিলন মাহমুদ।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশনস) সুদীপ্ত রায় জানান, গোলাগুলির ঘটনায় কাজী মিজানকে প্রধান আসামি করে ৬০থেকে ৬৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ পর্যন্ত মুসা ও কাজী মিজানসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত।
এর আগে শনিবার (১৭জুন) বিকাল ৩ টার দিকে আওয়ামী লীগের মিটিং এ যাওয়ার সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের দুই গ্রুপের মাঝে পূর্বে দ্বন্দ্বের জের ধরে গোলাগুলি হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয় তিনজন। পরে এদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে মোবারক হোসেন বাবুকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। গুরুতর আহত ইমরান বেপারী ও জহির কবিরাজকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়।
নিহত মোবারক হোসেন বাবু বাহাদুরপুর গ্রামেরই আবুল হোসেনের ছেলে। এ ঘটনায় আরও ৭ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত ইমরান নিহত মোবারকের ছেলে এবং জহির কবিরাজ একই গ্রামের মনু কবিরাজের ছেলে।
চলতি বছরের ১৬ মার্চ মোহনপুর ইউপি নির্বাচনে কাজী মিজানুর রহমান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হন। তাকে প্রথমে নৌকা প্রতীক দেয়া হলেও পরবর্তীতে অন্য আরেকজন নৌকার প্রার্থী হন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুর -২ (মতলব উত্তর ও দক্ষিণ) এ আসনে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রমকে বাদ দিয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এডভোকেট নুরুল আমিন রুহুলকে নৌকার দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। এই এলাকার এখন এমপি রুহুল।আবার মতলবের লোক ডক্টর সামসুল আলম মোহন। যাকে সরকার পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছে। এই আসুন মূলত এই আসনটি নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ত্রিমুখী গ্রুপিংয়ে জড়িয়ে পড়েছে। উল্লেখিত তিন নেতার অনুসারীদের মধ্যে এলাকায় রাজনৈতিক আধিপত্য ও মেঘনা নদীর বালু কাটা নিয়ে পূর্বের থেকেই বিরোধ চলে আসছিল বলে জনশ্রুতি রয়েছে । ইতিপূর্বে মায়া চৌধুরী ও এমপি রুহুলের অনুসারীদের মধ্যে কয়েকদফা সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। এবার গোলাগুলিতে প্রাণ হারাতে হলো মোবারক নামে একজনকে। আরো দুইজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিহত মোবারক আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য মায়া চৌধুরীর অনুসারী। অপরদিকে, মোহনপুর ইউপি চেয়ারম্যান কাজি মিজানসহ গ্রেপ্তার অন্যরা এমপি রুহুল ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মোহন সাহেবের অনুসারী বলে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে।