মৌলভীবাজারের পাহাড়, টিলা ও সমতল ভূমিতে এ বছর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণার উদ্ভাবিত আম সহ অন্যান্য উন্নত জাতের আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। এরইমধ্যে চাষিরা এসব আম বাজারজাত করতে শুরু করেছেন। চাহিদা থাকায় বেচাকেনাও ভালো হচ্ছে। এদিকে বাগান আরও সম্প্রসারণে চাষিদের সার্বিক সহায়তার কথা জানিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। পাহাড়ের টিলায় দৃষ্টিনন্দন আমবাগান। সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে ছোট-বড়-খাটো আকৃতির আমগাছ। বাণিজ্যিকভাবে গড়ে ওঠা এসব বাগানের গাছে গাছে অসংখ্য আম ঝুলে আছে। সবুজ থোকায় থোকায় আমের ভারে একরকম নুয়ে পড়ছে গাছগুলো।
মূলত মৌলভীবাজারের এ অঞ্চল প্রকৃতিগতভাবেই পাহাড় টিলা আর সমতলের সমন্বয় গড়ে ওঠা। এখানের মাটি ও আবহাওয়া মৌসুমি ফল চাষের অনুকূলে থাকায় অন্যান্য ফসলের মতো আম চাষেরও ব্যাপক উপযোগী। ফলে স্থানীয় জাতের পাশাপাশি কৃষি গবেষণার উদ্ভাবিত বারি-৪ ও ১১ জাতের আমসহ উন্নতজাতের হাঁড়িভাঙা, আম্রপালি, লেংরা, ফজলি ও অমৃত সাগর জাতের আমের বাগান গড়ে উঠেছে এ অঞ্চলে।এ বছর শুরুতেই মৌলভীবাজার সদর, শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, জুড়ি ও বড়লেখা উপজেলার পাহাড়ি টিলার আম বাগানগুলো মুকুলে মুকুলে ভরে উঠে।
তবে খরার কবলে পড়ে বেশকিছু মুকুল ঝরে পড়ার পরও এবারে ফলন ভালো হয়েছে। এরইমধ্যে বাগান থেকে আম নামিয়ে বাজারজাত শুরু করেছেন তারা। ফরমালিন মুক্ত থাকায় এসব আমের চাহিদা বেশি এবং বেচাকেনাও ভালো হচ্ছে। হাটবাজারের পাশাপাশি অনেক তরুণ চাষি অনলাইনের মাধ্যমে আম বিক্রি করছেন। ভালো দাম পাওয়াতে আম চাষিরাও খুশি।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ত্রৈলক্ষবিজয় গ্রামের আম চাষি আবদুল কাইয়ূম জানান, খরার পরও তার বাগানে আমের ফলন ভালো হয়েছে। এ পর্যন্ত তিনি ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকার টাকার আম বিক্রি করেছেন। একই উপজেলার মমরোজপুর গ্রামের নোমান মাহমুদ জানান তিনি গত পাঁচ বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে বারি-১১সহ উন্নতজাতের আম বাগান গডড়ে তুলেছেন। এ পর্যন্ত তিনি ৪০০ মণ আম বিক্রি করেছেন। তার বাগানে নভেম্বর মাস পর্যন্ত বিভিন্ন জাতের আম পাওয়া যাবে।
এ বছর জেলায় উন্নতজাতের আমের বাম্পার ফলনের কথা জানিয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামছুদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আম বাগান আরও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।’ চলতি মৌসুমে জেলার ১৯৪টি বাগানের ২ হাজার ২০৩ হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদ হয়েছে। এসব বাগান থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৯ হাজার টন।