ছিন্ন চালা ঘরের ওপর পলিথিন মুড়িয়ে খেয়ে না খেয়ে মানবেতার জীবনযাপন করছেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের বজরা হলদিয়া গ্রামের দিনমুজুর রহেদ আলীর পরিবার। রহেদ আলীর পৈত্রিক সম্পত্তি না থাকায় স্ত্রী সন্তান নিয়ে অন্যের জমিতে বসবাস করে আসছিলো। নিজের জমি না থাকায় ছেলের শ্বশুর বাড়ীর এককোনে পুরনো টিনের জোড়া তালি দেওয়া ছোট্ট একটি ছিন্ন চালা ঘরে পলিথিন মুড়িয়ে কোনভাবে রাত্রি যাপন করেন। একটু বৃষ্টি হলেই ছিন্ন চালা ঘরের ফুটো দিয়ে পড়ে অঝরে পানি। ভিজে যায় ঘরের ভিতর থাকা সকল বিছানাসহ আসবারপত্র। রহেদ আলীর সংসার চলে অন্যের জমিতে দিনমুজুরের কাজ করে। স্ত্রী সন্তান নিয়ে মানবেতার জীবনযাপন করছে পারবারটি।
রহেদ আলীর স্ত্রী মনোয়ারা বেগম জানান, অনেকের কাছে গিয়েছিলো একটু আশ্রয়ণের ঘরের জন্য কিন্তু সবাই আশ^াস দিলেও আজ পর্যন্ত আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঠাই মেলেনি। সারাদিন অন্যের জমিতে কাজ করে রাতের ঘুমানোর ঠিকানা যেনো হচ্ছে না তাদের। ছেলের শ্বশুর বাড়ীতে এখন আর থাকার জায়গা হচ্ছে না। ছেলের শ্বশুর রফিকুল ইসলাম কয়েক বছর আগে অসুস্থ জনিত কারণে মৃত্যু হয় এখন তার ছেলে আবুল কালাম জায়গা ছেড়ে দেয়ার কথা বলছে। আমার স্বামীসহ একটি ঘরের জন্য অনেকের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রায়ন থেকে বঞ্চিত হয়ে গেলাম। আর এই আশ্রয়ণ প্রকল্প আসার পর থেকেই জায়গা ফাকা করার নির্দেশ দিচ্ছে আবুল কালাম। একটি ঘরের জন্য ধোপাডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে অনেক গিয়েছি চেয়ারম্যান বাড়ীতে এসে দেখে আশ্রয়ণ প্রকল্পের জমিসহ ঘর ব্যবস্থা করে দিবেন বলেছিলো কিন্তু এখনও পাইনি। গ্রামের অনেকের পরার্মশ আমি ও আমার স্বামী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিসেস আফরুজা বারীর কাছে গিয়ে কথা বললে তিনি আমাদের আইডি কার্ড ও আবেদন ফরমে সুপারিশ কারে দিয়ে ভুমি অফিসে জমা দিতে বলেন। কিন্তু সুপারিশকৃত আবেদন জমা দিয়ে অনেক দিনেই ঘুরেছি কিন্তু সুপারিশেও কাজ হয়নি। ইউপি চেয়ারম্যান মোকলেছুর রহমান মন্ডল জানান, রহেদ আলী এই ইউনিয়নের দীর্ঘ ৩০ বছর থেকে ছেলের শ্বশুর বাড়ীতে আশ্রয়ে থাকে। আমি গিয়েছিলাম তার আবেদন ভূমি অফিসে দিয়েছে তালিকায় নাম আসলে তাকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার জমিসহ ঘর প্রদান করা হবে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ওয়ালিফ মন্ডল জানান, আমি এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের নিদের্শনা পেলে রহেদ আলীর ঠাই অবশ্যই আশ্রয়ণ প্রকল্পে হবে। উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মাসুদুর রহমান জানান, রহেদ আলীর আবেদন পেয়েছি আমরা তার বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।