সন্ত্রাসী হামলায় নিহত সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমের বাড়িতে গিয়েছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ। দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার আশ্বাস দেন তিনি। মঙ্গলবার দুপুরে বকশীগঞ্জের নিলাক্ষিয়া ইউনিয়নের গোমেরচর গ্রামে নাদিমের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন তাদের পাশে আছে বলে জানান। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, নাদিম হত্যার দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি হবে। যা দেখে ভবিষ্যতে আর কোনো মানুষ সাংবাদিকদের গায়ে হাত তোলার সাহস দেখাবে না। মামলা ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। সকল অপরাধীই ধরা পড়বে।
সাংবাদিক সাগর রুনি হত্যাকান্ডের মত সাংবাদিক নাদিম হত্যার ঘটনাও চাপা পড়ে থাকবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান বলেন,আমরা এই বিষয়ে অবগত আছি। বিশেষ করে সাগর রুনি হত্যাকান্ডে বিষয়টি প্রায় ১শ বার পিছিয়েছে। তবে আমি বিশ^াস করি যে এই রিপোর্টও আসবে এবং বিচার হবে। আর অন্যান্যগুলো যেগুলো রয়েছে যেখানে যেখানে যাদের ধরতে পেরেছে বিচারিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিচারে শেষ পর্যন্ত শাস্তি হবে।
আমার মনে হয় নাদিমের হত্যাকান্ডের ঘটনার ক্ষেত্রে যারা অন্যায়কারী তাদেরকে ধরপাকড় করার ক্ষেত্রে সফলতার পরিমান অনেক বেশি এবং অনেক কিছুই কিন্তু সুস্পষ্ট। সিসিটিভি থেকে শুরু করে পরবর্তী ঘটনাগুলো সুসস্পষ্ট এবং ইতিবাচক। এই ধারাবাহিকতায় আমি বিশ^াস করি এখানে বিলম্ব হওয়ার মত বা অস্বস্তি হওয়ার মত অবস্থা নেই। আমি সরকারের সাথে কথা বলেছি,আইনমন্ত্রীর সাথেও স্পষ্ট কথা বলেছি,অবশ্যই এর বিচার হবে। এই সময় জামালপুরের পুলিশ সুপার নাছির উদ্দীন আহমেদসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
১৪ জুন রাতে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে বাড়ি ফেরার পথে বাংলানিউজের জেলা প্রতিনিধি ও একাত্তর টেলিভিশনের বকশীগঞ্জ প্রতিনিধি গোলাম রব্বানী নাদিমের ওপর হামলা করে সন্ত্রাসীরা। সাধুরপাড়া ইউপি’র চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর নেতৃতে সন্ত্রাসীরা বকশিগঞ্জ সরকারি কলেজ মোড় এলাকায় মোটরসাইলের গতিরোধ করে তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। পরে ১০-১২ জন এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত করে ফেলে রেখে যায়। তাকে প্রথমে বকশীগঞ্জ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখান থেকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে পরের দিন সকালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে মাহমুদুল আলম বাবুকে প্রধান আসামি করে ২২ জনের নাম উল্লেখ্য এবং অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। প্রধান আসামিসহ ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে আনা হয়েছে বকশীগঞ্জ থানায়।