কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতির ইয়াবা সেবনের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাসহ সুশীল সমাজের মানুষ। মঙ্গলবার রাতে ছাত্রলীগের ওই নেতাকে কারণ দর্শানোর জন্য প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে জেলা ছাত্রলীগ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাজিবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খাইরুল ইসলামকে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে কেন স্বীয় পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হবে না, সে মর্মে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয় ওই নেতাকে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ৫০ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খাইরুল ইসলাম একটি আবদ্ধ ঘরে ইয়াবা সেবন করছেন। সেখানে খাইরুলকে সহযোগিতা করছেন ফরিদুল নামে এক ছাত্রলীগ কর্মী। তবে এই ভিডিওটি কতদিন আগে ধারণ করা হয়েছে তা নিশ্চিত করতে পারেনি কেউ।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওর প্রতিবাদ জানিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ নেতা। স্ট্যাটাসে উল্লেখ করা হয়, একটি মহল প্রায় সাত বছর আগে তাকে ডেকে নিয়ে গোপনে ভিডিও ধারণ করে। তিনি মাদক সেবনকারী কিনা তা প্রমাণ করতে ডোপ টেস্টেরও দাবি তোলা হয় ওই স্ট্যাটাসে। তবে কিছু সময় পর তার ফেসবুক থেকে মুছে ফেলা হয় স্ট্যাটাসটি।
রাজিবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তারেকের দাবি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি উপজেলা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সভাপতি খাইরুল ইসলামের। মাদক সেবনের ভিডিওটি শতভাগ সত্যি। এ কারণে রোববার যুবলীগের শান্তি সমাবেশে তাকে বক্তব্য দিতে দেয়নি স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এনিয়ে সর্বত্রই আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
বিষয়টি জানতে চাইলে রাজিবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খাইরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ভিডিওতে মাদক সেবনের দৃশ্যে আমার ছবি এডিট করে বসানো হয়েছে। আমার নাম ব্যবহার করে ফেসবুকে ফেক আইডি খুলে যে পোস্টটি করা হয়েছে, তা আমার নয়। তার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করছে বলে দাবি করেন তিনি।
তবে ছাত্রলীগের ওই নেতার মাদক সেবনের ভিডিওটির সত্যতা নিশ্চিত করে রাজিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই সরকার বলেন, ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খাইরুল ইসলাম মাদক সেবন করছে। তার ছবি কোনো এডিট করা ছবি নয়। সে এডিট করার বিষয়ে মিথ্যে বলছে। এ বিষয়টি জেলা কমিটিকে জানানো হয়েছে।
কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাজু আহমেদ বলেন, যেহেতু তার (্রাজিবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি) বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া মাদক সেবনের অভিযোগ উঠেছে। সেই ভিডিওটি কতদিন আগের তা সত্যতা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য এবং তাকে কেন দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে না, সে জন্য ১০দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে ওই নেতাকে।