ডিজিটালের ছোঁয়ায় ইউটিউবের কল্যাণেসখের বসে আঙুর চাষ করে প্রত্যাশার চেয়ে অধিক ফলন পেয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন এক গৃহবধূ। প্রথম আবাদে ভালো ফলন পাওয়ায় চাষের পরিধি আরো বৃদ্ধি করার কথা জানিয়েছেন লাভলী বেগম নামের ওই কৃষি উদ্যোক্তা।
জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের দোয়ারিকা গ্রামের বাসিন্দা ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা আবদুস সালামের স্ত্রী লাভলী বেগমের আঙুর বাগান দেখতে প্রতিনিয়ত এলাকাবাসী ভিড় করছেন। লাভলী বেগম বলেন, আঙুর চাষের তার কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিলোনা। শুধু ডিজিটালের ছোঁয়ায় ইউটিউব দেখে তিনি উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বামীর কাছে আঙুর চাষের আগ্রহ প্রকাশ করি। সাংসারিক কাজ শেষে অবসর সময়কে কাজে লাগানোর চিন্তা থেকে তার এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন আমার স্বামী সাবেক সেনা কর্মকর্তা আবদুস সালাম।
তিনি আরও বলেন, ইউটিউবে ঝিনাইদহের এক আঙুর চাষির ব্লগ দেখে ওই চাষির মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করে প্রতি পিস পাঁচশ’ টাকা দরে ৪৬টি আঙুর গাছের কলম সংগ্রহ করি। বাগানের আঙুরগুলো কাশ্মিরের ছমছম প্রজাতির জানিয়ে গৃহবধূ লাভলী বেগম জানান, ২০২২ সালের মার্চ মাসে বাড়ির সামনের ১২ শতক পরিত্যক্ত জমি প্রস্তুত করে সংগ্রহ করা আঙুরের কলম রোপন করি। এরপর সাত মাসের পরিচর্যায় প্রথমে কয়েক থোকা আঙুর হয়। ধীরে ধীরে সবগুলো গাছেই পর্যাপ্ত আঙুর ধরে। প্রথমদিকে আঙুরগুলো মিষ্টি না টক হয়, তা নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় ছিলেন লাভলী বেগম। পরবর্তীতে দেখা যায় লাভলী বেগমের বাগানের আঙুরগুলো বেশ সুস্বাদু ও মিষ্টি হয়েছে। এরইমধ্যে বেশ কিছু আঙুর তিনি বিক্রিও করেছেন। আঙুরের পাশাপাশি তিনশ’ টাকা করে প্রতিটি আঙুর গাছের কলম বিক্রি করা হচ্ছে।
লাভলী বেগম বলেন, কাশ্মিরের মাটির সাথে বরিশালের মাটির অনেক পার্থক্য। তবে আঙুর চাষ করে আমার মনে হয়েছে, সব মাটিতেই সুস্বাদু এ ফল হয়। প্রথমবারেই বাম্পার ফলন আসায় তিনি আঙুর চাষের পরিধি আরো বৃদ্ধি করার কথা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে বাবুগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মো. মামুনুর রহমান বলেন, লাভলী বেগম নিজ উদ্যোগে পরিত্যক্ত জমিতে আঙুর চাষ করেছেন। তাকে বিভিন্ন সময়ে আমরা পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করেছি। তাকে দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে অন্যান্য কৃষকরা যারা আঙুর চাষ করবেন, তাদেরকেও আমরা একইভাবে সহায়তা করবো। তিনি আরও বলেন, লাভলী বেগমের মতো গ্রামের অন্যান্য নারী-পুরুষরা এভাবে ফল চাষে উদ্যোগী হলে আঙুর আমদানি করার প্রয়োজনীয়তা কমে আসবে।