দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মুমূর্ষু অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়ার প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়েছে। তিনি মুমূর্ষু অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। তার পরিবর্তে তারই সুযোগ্য সন্তান তারেক রহমান নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আমরা তার নেতৃত্বে ইনশাআল্লাহ্ এগিয়ে যাবো। আজ শুক্রবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় এক দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের সুস্থতা ও সুস্বাস্থ্য কামনায় এ দোয়া মাহফিল আয়োজন করে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিইএব) ঢাকা জেলা শাখা। রিজভী বলেন, খালেদা জিয়া সারাজীবন গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করেছেন। আজকে তাকে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে। তার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ হচ্ছে কসাই। আমাদের প্রত্যেক নেতাকর্মী নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার। সরকারের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, গোটা দেশকে আন্তর্জাতিক খেলাধুলার মাঠ বানিয়েছেন বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অটুট সার্বভৌমত্বের দিশারী ছিলেন জিয়াউর রহমান, তিনি সার্বভৌমত্বকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। বাইরের কোনো দেশ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে প্রকাশ্যে টু শব্দ করতে পারতো না, গোপন ষড়যন্ত্র তো সবসময়ই থাকে। কিন্তু আজকে শেখ হাসিনার কারণে বাংলাদেশের মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে। তার কারণে বিদেশি রাষ্ট্র কথা বলতে পারছে। বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, আজকে শেখ হাসিনা সেন্টমার্টিন দ্বীপ দেননি বলে ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না মর্মে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। কেন, এজন্য তো তিনিই দায়ী। তিনি দিনের ভোট রাতে করেন। গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়েছেন। তিনি ভোট চুরি নয়, ভোট ছিনতাই করে জোর করে ক্ষমতা দখল করে রেখেছেন। জনগণ তো এখন ভোট দিতে যায় না। আর শেখ হাসিনার বশংবদ নির্বাচন কমিশন বলে যে, ভোট সুষ্ঠু হয়েছে। আসলে জনগণ এটা বিশ্বাস করে না। রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বড় বড় কথা বলেন, দেশে এসে উনি কারও কাছে মাথানত করবেন না কাউকে পাত্তা দেন না জানিয়েছেন। তিনি সেন্টমার্টিন দেননি বলে ক্ষমতায় থাকতে না পারার সংশয় প্রকাশ করেছেন। কেন আজকে এসব কথা হবে? এর জন্য তো উনিই দায়ী। উনি মানুষের ভোটের গণতান্ত্রিক অধিকারকে নির্বাসনে পাঠিয়েছেন। এটা কি অসত্য? তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা নাকি মাথানত করেন না। তাহলে আমেরিকার সহযোগিতার জন্য ভারতকে অনুরোধ করেছেন কেন? আসলে উনি তলে তলে ঘুষ দিয়ে তাদের নিজের পক্ষে রাখার চেষ্টা করেন। তবে মনে রাখতে হবে- সবাই কিন্তু ঘুষ খান না। রিজভী বলেন, বর্তমান সরকার তো লোভী। দেশের মানুষের প্রতি এ সরকারের কোনো মায়া নেই। ওয়ান ইলেভেনের সময় তিনি (শেখ হাসিনা) তো দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন। কিন্তু খালেদা জিয়া সেটা করেননি। সুতরাং কয়েকটি ফ্লাইওভার বা পদ্মাসেতু করে দিলেই হয় না। জনগণ সরকারের ভেলকিবাজি বুঝে। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এইচএম আমিনুর রহমান আমিনের সভাপতিত্বে ও মো. জুয়েল রানার পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, ওলামা দলের আহ্বায়ক শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হক, হাফেজ মাসুম বিল্লাহ, মৎস্যজীবী দলের মো. আবদুর রহিম, তাঁতী দলের খন্দকার হেলাল উদ্দিন, সিলেট জেলা বিএনপির শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সহ-সম্পাদক তামিম ইয়াহিয়া আহমদ প্রমুখ।