ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতৃবৃন্দ ও একাধিক বীরমুক্তিযোদ্ধা গত ১৯ জুন মহান জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসনের (৩১২) সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগমের দেয়া বক্তব্যকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন দাবী করেছেন। সেই সাথে তারা ওই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এর আগে ২০২২ সালের ২৭ জুন তারিখেও তিনি অনুরূপ মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছিলেন। তিনি সরাইল আ’লীগকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। শনিবার দুপুরে সরাইল উপজেলা পরিষদে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ৪ জনের স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আ.লীগের সাবেক সম্পাদক রফিক উদ্দিন ঠাকুর। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ও সদর ইউপি আ.লীগের সভাপতি মো. ইসমত আলী, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও আ.লীগ নেতা মো. ইদ্রিস আলী, উপজেলা আ.লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও সদর ইউনিয়নের টানা তিনবারের চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার, আ.লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুবলীগের আহ্বায়ক মো. মাহফুজ আলী প্রমূখ। লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, শুধুমাত্র রাজনৈতিক ভাবে আধিপত্য বিস্তারের জন্য ইকবাল আজাদ হত্যা মামলায় আমাদেরকে আসামি করা হয়েছে। আমাদেরকে হয়রানি, মানসিক ভাবে নির্যাতন ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে সরাইল আওয়ামী লীগের কবর রচনা করাই তাদের উদ্যেশ্য। এরই ধারাবাহিকতায় হীন উদ্যেশ্যে আমাদেরকে মোস্তাকের উত্তরসূরি তাহের উদ্দিন ঠাকুর চক্র বলেছেন মহিলা এমপি। বিষয়টি অত্যন্ত দু:খজনক। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার অন্যতম কুশিলব তাহের উদ্দিন ঠাকুরের ফাঁসির দাবীতে আমরাই রাজপথে সভা সমাবেশ ও প্রতিবাদ করেছি। আর তথ্য প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর তাহের উদ্দিন ঠাকুরকে মহিলা এমপির শ্বশুর আবদুল খালেক টয়োটা গাড়ী উপহার দিয়েছিলেন। প্রকৃত সত্য হচ্ছে আবদুল খালেক যুদ্ধাপরাধী ছিলেন। এখানকার সকল গণহত্যাতে ওঁর সম্পৃক্ততা ছিল। সরাইলের মুক্তিযোদ্ধাদের ভাষ্যমতে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আবদুল খালেক আত্মগোপনে ছিলেন। তাহের উদ্দিন ঠাকুরের সরাসরি হস্তক্ষেপে তিনি মুসলিগ লীগ থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষুদ্ধ হয়ে ১৯৭৪ সালে আবদুল খালেককে হত্যা করেছে। ওঁর ভাসুর হুমায়ুন আজাদ ঠিকাদারি কাজে কুমিল্লা যাওয়ার পথে সড়ক দূর্ঘটনায় মারা গেছেন। আর পারিবারিক নির্যাতনে মারা গেছেন জাহাঙ্গীর আজাদ। সুযোগে তিনি উদুর পিন্ডি বুদুর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছেন। মহিলা এমপি তার স্বামী হত্যা মামলায় রাজনৈতিক ভাবে ফায়দা হাসিলের জন্য একের পর এক মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন। সরাইল আ’লীগকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত এমন ৩-৪ জনকে আসামি করেননি। আসামি করেছেন ঘটনার সাথে জড়িত নয় বাংলাদেশ আ.লীগ সরাইল শাখার সাবেক সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহসভাপতিগণ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক, যুবলীগের আহবায়ক, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, ডেপুটি কমান্ডার, উপজেলা কৃষকলীগ, ইউপি চেয়ারম্যান, বীরমুক্তিযোদ্ধাসহ ২৯ জন নেতা কর্মীকে। এরপর তিনি তিন মাসের আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে পাড় করেছেন ৯ বছর। আর ৩ সদস্যের আওয়ামী লীগ দিয়ে পার করছেন ৯ মাস। নিজেদেরকে শতভাগ নির্দোষ দাবী করে তারা বলেন, আমরাও ইকবাল আজাদ হত্যার বিচার চাই। তবে এই হত্যা মামলাটির পুনরায় তদন্ত করে প্রকৃত আসামীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হউক। উদ্যেশ্য প্রণোদিত ভাবে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে বারবার আমাদেরকে হয়রানি করলে আমরাও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সুশৃঙ্খলভাবে একের পর এক কর্মসূচি দিয়ে যাব।