এবার সহকর্মীদের দায়িত্বে অবহেলায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক স্টাফ নার্সের (ব্রাদার) স্ত্রীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। স্ত্রী মার্থা অঞ্জু মন্ডলের (৩৮) মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়ে পরেছেন ব্রাদার লিটন গোমেজ। তার ১৪ বছর বয়সের একমাত্র ছেলে সন্তান রয়েছে।
লিটন গোমেজের স্বজন ও সহকর্মীরা জানিয়েছেন, কর্মের সুবাদে বরগুনার বাসিন্দা লিটন গোমেজ বরিশাল নগরীতে পরিবার নিয়ে থাকেন। তার স্ত্রীর ফুসফুসে সমস্যা রয়েছে। সেই সমস্যার কারণে শুক্রবার দিবাগত রাত ১২ টার দিকে লিটন গোমেজ তার স্ত্রী অঞ্জু মন্ডলকে শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। প্রথমে তার স্ত্রীকে সিসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা দেয়ার কিছুক্ষন পর চিকিৎসকরা ভেন্টিলেটরি সাপোর্টের জন্য অঞ্জুকে আইসিইউতে নিয়ে যেতে বলেন।
সহকর্মীরা জানিয়েছেন, লিটন এ হাসপাতালে চাকরি করার সুবাদে তিনি জানিয়েছেন আইসিইউতে বেড খালি রয়েছে কিনা তা আগে জানতে হয়, তারপর রোগীকে নিতে হয়। এ কারণে লিটন কাগজ নিয়ে সিসিইউর নীচতলায় থাকা আইসিউতে যান। সেখানে যাওয়ার পর দায়িত্বরত স্টাফ নার্স (সেবিকা) অপু রাণী ও লাভলী আক্তার চিকিৎসক নেই বিধায় রোগীকে ভেন্টিলেটরি সাপোর্টে রাখা যাবেনা বলে জানায়।
এরপর লিটন বিষয়টি সিসিইউর চিকিৎসকদের জানানোর পর তারা রোগীকে নতুন ভবনের মেডিসিন ওয়ার্ডে পাঠান। সেখানে রোগীকে নেওয়া হলে চিকিৎসকরার সিসিইউর কাগজ বাদ দিয়ে রোগীকে নতুন করে ভর্তির নির্দেশ দেন। এরপর রাত আড়াইটার পরে অঞ্জুকে নতুন করে ভর্তি করিয়ে মেডিসিন ওয়ার্ডের অধীনে পোষ্ট সিসিইউ ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া শুরু হয়। তবে সেখানকার চিকিৎসা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত না হওয়ায় শনিবার সকালে অঞ্জুর মৃত্যু হয়।
লিটনের সহকর্মীদের অভিযোগ, সিসিইউর সেবিকারা যথেষ্ট প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত ও অভিজ্ঞ। তারা সেখানে ভেন্টিলেটরি সাপোর্টে নিজেরাই রাখতে পারতেন, তাহলে হয়তো অঞ্জুকে বাঁচানো যেতো। তারা এ ঘটনার তদন্ত দাবি করছেন। সেইসাথে যাদের দায়িত্বে অবহেলা রয়েছে তাদের বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে সিসিইউর দায়িত্বরত সেবিকারা কোন কথা বলতে না চাইলেও শেবাচিম হাসপাতালের সেবা তত্ত্বাবধায়ক রওশন আরা বেগম বলেন, লিটন রোগীকে নিয়ে আইসিউতে আসেনি। সে একা এসেছিলেন, আর তখন বলেননি যে রোগী তার স্ত্রী। তাহলে বিষয়টি হয়তো আলাদা হতো। পরিচয় না দিলে সেই রোগীর চিকিৎসা হবে না বিষয়টি এমন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সব রোগীকে সেবা দেই। তবে যেহেতু লিটন আমাদের সহকর্মী তাই রোগী তার স্ত্রীর বিষয়টি বলতে পারতেন। তিনি আরও বলেন, লিটন গোমেজের সাথে কথা বলে সে যদি অভিযোগ দায়ের করেন তাহলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।