গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার খোর্দ্দা গ্রামে বুড়াইল নদীর উপর নির্মিত দুইটি কাঠের সাঁকো বৃষ্টির পানির স্রােতে ও কচুরি পানার চাপে ভেঙ্গে যাওয়ায় দু’পাড়ের মানুষ পারাপার হতে না পেরে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন। এ কারণে জরুরী প্রয়োজনে দু’পাড়ের মানুষ জীবনের ঝুঁকি পারাপার হতে বাধ্য হচ্ছেন। এলাকাবাসীর দাবি ব্রিজ নির্মাণসহ ভগ্ন রাস্তা পাকাকরণ জরুরি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গত ২৪ বছর থেকে এ কাঠের সাঁকোর স্থানে এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে ও নিজেদের অর্থে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে পারাপার হতেন। খোর্দ্দা ও লাটশালা গ্রামে দেশের বৃহৎ বেসরকারি সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন তিস্তা সোলার লিমিটেডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও যাতায়াত করতেন এ সাঁকো দিয়ে। পাঁচ বছর আগে তিস্তা সোলার লিমিটেড নিজস্ব অর্থায়নে খোর্দ্দা ও লাটশালা গ্রামে ২.৫ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ ও বুড়াইল নদীর উপর কাঠের সাঁকো নির্মাণ করে। এতে করে সুন্দরগঞ্জ থেকে তিস্তা সোলার প্রকল্পে যাতায়াত পথ সুগম হয়। ছোট-খাটো যানবাহনে মালামাল ও কৃষিপণ্য পরিবহন করা যেত এ সাঁকো দিয়ে। যোগাযোগের পথ সুগম হওয়ায় চরাঞ্চলবাসির জীবন যাত্রার মানও বেড়ে যায়। কিন্তু গত তিন বছর আগে কাঠের সাঁকোটির বেশিরভাগ অংশ ভেঙ্গে গেলে তিস্তা সোলার কর্তৃপক্ষ আর মেরামত করেনি। বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী আবারও নিজেদের শ্রম ও স্থানীয় এমপি ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীর অর্থায়নে সাঁকো নির্মাণ করে যাতায়াত করতে থাকে। এ অবস্থায় কয়েকদিনের ভারী বর্ষনের ফলে পানির স্রােত ও কচুরি পানার চাপে গত ২২ জুন বুড়াইল নদীর উপর নির্মিত একই গ্রামে দুইটি কাঠের সাঁকো ভেঙ্গে যায়। এতে পারাপার হতে না পেরে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। চরাঞ্চলের মানুষের উন্নত জীবন যাত্রার ধারা অব্যাহত রাখতে সরকারিভাবে ব্রীজ নির্মাণ করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
এ সাঁকো দুইটির পূর্ব ও উত্তর খোর্দ্দা ও লাটশালা গ্রাম। এ দুই গ্রামের মানুষসহ পার্শবর্তী উলিপুর উপজেলার মানুষজন সপ্তাহের শনি ও বুধবার উপজেলার সর্ববৃহৎ মীরগঞ্জ হাটে গিয়ে মালামাল বেচা কেনা করে থাকেন। এ ছাড়া মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ গামী ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবকসহ শিক্ষকরাও যাতায়াত করেন এ সাঁকো দুইটি দিয়েই। খোর্দ্দা গ্রামের স্কুলের বাজার ও লাটশালার চরের নতুন বাজারের ব্যবসায়ীরাও মালামাল পরিবহন করতে না পেরে পড়েছেন বিপাকে। খোর্দ্দা ও লাটশালার পূর্ব পাশে তিস্তা নদী। তিস্তা নদীর আসান খেয়াঘাট দিয়েই পার্শ্ববর্তী উলিপুর উপজেলার লোকজনও এ সাঁকো দুইটি দিয়েই পারাপার হয়ে রংপুর, গাইবান্ধাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন। তারাও পড়েছেন বিপাকে। বুড়াইল নদীর দুই পাড়ের প্রায় ২৫/৩০ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
খোর্দ্দার চরের বাসিন্দা আঃ রাজ্জাক বলেন দুইটি স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণসহ খোর্দ্দা ও লাটশালা গ্রামের রাস্তা পাঁকা করা দরকার। উপজেলা প্রকৌশলী শামসুল আরেফিন খান বলেন, ওই ব্রিজ নির্মাণ ও রাস্তা পাকাকরণ কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।