আগত ঈদ উল আযহা উপলক্ষে নীলফামারী জেলায় কদর বেড়েছে মাংস কাটার খাটিয়ার। রাত পোহালেই পালিত হবে মুসলমানদের অন্যতম পবিত্র উৎসব ঈদ উল আযহা। এ ঈদকে সামনে রেখে জেলার সকল উপজেলায় কদর বেড়েছে কুরবানির গরুর মাংস কাটার খাটিয়ার। ২৭ জুন দেখা যায় নীলফামারী জেলার বিভিন্ন এলাকার স’ মিলে চলছে কাঠ কাটার কাজ। তেতুল, এট্রি কড়াই ও কাঁঠাল গাছের গুড়ি গুড়ি টুকরা করা হচ্ছে বিভিন্ন স’মিলে। ছোট ছোট গোলাকৃতির টুকরা তৈরি করা হচ্ছে। আর এ গোল টুকরা গুলোই কুরবানির পশুর মাংস কাটার খাটিয়া হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
কোন কোন স’মিল মালিকরা আগে থেকেই ওই টুকরা বিক্রির জন্য সাজিয়ে রেখেছে। মৌসুমী বিক্রেতারা মিল থেকে ভ্যানে করে তা ক্রয় করে নিজ নিজ এলাকায় নিয়ে যাচ্ছেন। তারা বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী দোকান বসিয়ে সেগুলো বিক্রি করছে।
সৈয়দপুরের খাটিয়া ব্যবসায়ি হযরত আলি সরকার জানান ছোট, বড় ও মাঝারি আকার অনুযায়ী একেকটি খাটিয়া বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ৪শ টাকা দরে।
তিনি বলেন, গ্রামাঞ্চলে তেঁতুল গাছ পাওয়া বড়ই দায়। যদিও পাওয়া যায় তার দাম অত্যন্ত চড়া। যার কারণে তেঁতুল গাছ দিয়ে তৈরি করা খাটিয়ার দাম একটু বেশি নেয়া হচ্ছে।
ডিমলার ব্যবসায়ি হাকিম বলেন, খাটিয়া সব কাঠ দিয়ে হয় না। এটি তৈরি করতে হয় এমন কাঠ দিয়ে, যাতে চাপাতির (মাংস কাটার যন্ত্র) কোপে কাঠের গুঁড়া না ওঠে। কোরবানির মাংস কাটার জন্য তৈরি করা এসব খাটিয়ার অধিকাংশই তেঁতুল গাছের কাঠ দিয়ে তৈরি। কারণ তেতুল কাঠে সহজে চাপাতির কোপ বসবে না। তাই কাঠের গুঁড়াও উঠবে না। ফলে মাংস নষ্ট হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
এ দিকে জলঢাকার ব্যবসায়ি হোসেন আলি ও কিশোরগঞ্জের ব্যবসায়ি ফরহাদ জানান, সব সময় আমরা খাটিয়া বিক্রি করি না। শুধু ঈদ উল আযহা উপলক্ষে বিক্রি করি। তবে কোন সময় ক্ষতি হয়নি ব্যবসায়।
স’মিলে খাটিয়ার কাজ করা হাসান জানান, ‘মাংস কাটার খাটিয়া সব ধরনের কাঠ দিয়ে তৈরি করা যায় না। তেতুল গাছ হলে সবচেয়ে ভাল হয়। কারণ তেঁতুল কাঠ খুব শক্ত ও চিমটে। এতে সহজে কোপ বসে না। ফলে মাংস কাটতে কোনো সমস্যা হয় না।
সৈয়দপুরের খাটিয়া ক্রেতা মাইনুল হক জানান, প্রতিবছর কোরবানীর ঈদ আসলেই খাটিয়ার প্রয়োজন হয়। এ বছর তেতুল গাছের একটি মাঝারী গুড়ি খাটিয়া নিলাম। দাম নিয়েছে তিনশ টাকা।
সাংবাদিক ওবায়দুল ইসলাম জানান, নীলফামারী জেলার মধ্যে সৈয়দপুরে খাটিয়ার ব্যবহার বেশী হয়ে থাকে। এখানের প্রায় বিশটি স’মিলে চলে খাটিয়া তৈরীর কাজ। এখান থেকে খাটিয়া চলে যায় জেলার বিভিন্ন স্থানে। এমনকি রাজধানী ঢাকাতেও চলে যায় সৈয়দপুরের তৈরী খাটিয়া।