ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীরটেক গ্রামের প্রধান সড়ক ঘেষে সরকারি খাল ভরাট করে প্রায় দু’বছর ধরে বসতবাড়ী নির্মান করে চলেছেন ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির বেপারী। তিনি উপজেলা পদ্মা নদীর অপর পারের চর হরিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। প্রায় দু’বছর আগে তিনি ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নের বড় গাজীরটেক গ্রামের খালের অপর পারে নতুন একটি বসতবাড়ী নির্মান কাজ শুরু করেন। ওই বসতবাড়ীতে যাতায়াতের জন্য তিনি শতবর্ষীয় পুরোনো খালটি মাটি দিয়ে ভরাট করে রাস্তা নির্মান করেন। এতে ওই গ্রামের একমাত্র খালটির পানি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বদ্ধ খালের আশপাশে বিস্তৃর্ন ফসলী মাঠগুলো পাচ্ছে না পর্যাপ্ত পানি এবং বঞ্চিত হচ্ছে সেচ সুবিধা থেকে।
জানা যায়, ওই বাড়ী নির্মানকালে উপজেলা প্রশাসন খালটি উন্মুক্ত করে দেওয়ার জন্য বার বার অনুরোধ করলে চেয়ারম্যান বদ্ধ খাল পয়েন্টে নিজ খরচে একটি কালভার্ট নির্মান করে দেবেন বলে সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে আশ্বাস দিয়ে বাড়ী নির্মান করতে থাকেন। কিন্তু ‘বেপারী বাড়ী’ নামকরন করে চেয়ারম্যান বাড়ী গড়া হলেও গত দু’বছরে পানি চলাচলের জন্য বদ্ধ খাল পয়েন্টে নির্মান হয় নাই কালভার্ট। ফলে মাঠের ফসলী জমি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এলাকার শত শত কৃষক পরিবার।
এ ব্যপারে মঙ্গলবার ওই ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির বেপারীকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন “ আমর নতুন বাড়ী যাতায়াতের রাস্তার জন্য যখন খালটি ভরাট করি তখন মাটি ফেলানোর সময় দু’টি পাইপ বসিয়ে দিয়েছি। ওই পাইপ দিয়ে খালের পানি চলাচল করতে পারবে”। ওই গাজীরটেক ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা (তহশিলদার) জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, “ প্রায় দু’বছর আগে জাহাঙ্গীর চেয়ারম্যান নতুন বাড়ী নির্মানকালে বদ্ধ খাল পয়েন্টে জনস্বার্থে একটি কালভার্ট নির্মান করে দেবেন বলে সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানজিলা কবির ত্রপা স্যারকে আশ্বাস দিয়ে খাল ভরাট করেছিল। কিন্তু গত দু’বছরেও চেয়ারম্যান খালের মধ্যে কালভার্ট নির্মান করেন নাই”।
ভুক্তভোগী কৃষকরা জানায়, ওই খলি দিয়ে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে আশপাশের পাচটি গ্রামের ফসলী মাঠে পানি চলাচল করত। ওই খাল সংলগ্ন গ্রামগুলো হলো- উপজেলার বড় গাজীরটেক গ্রাম, ছোট গাজীরটেক গ্রাম, চর সর্বান্দিয়া গ্রাম, চরসুলতানপুর গ্রাম ও দোপা ডাঙ্গী গ্রামের বিস্তৃর্ণ ফসলী মাঠ। বর্ষার পানি চলাচলের ফলে গ্রামগুলোর জমির উর্বরতা বৃদ্ধি, পাটজাগ, সেচ সুবিধা ও এলাকায় মৎস্য প্রজাতি ছড়িয়ে পড়ত। কিন্তু গত দু’বছর ধরে খালটির মাঝ পয়েন্টে বন্ধ থাকার কারণে গ্রামগুলোর ফসলী মাঠগুলো পর্যাপ্ত পানি পাচ্ছে না। ভেঙে পড়েছে এলাকার কৃষি ও মৎস্য উৎপাদন। তাই মঙ্গলবার ভুক্তভোগী কৃষকরা খালটি উন্মুক্ত করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন।