শেরপুরের শ্রীবরদীতে আলো ছড়াচ্ছে কিশোর কিশোরী ক্লাব। উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিসের আওতায় কিশোর কিশোরী ক্লাবগুলোতে সপ্তাহে দুইদিন শিখানো হচ্ছে বাদ্য যন্ত্র, গান ও কবিতা পাঠ। এখানে সুযোগ পাচ্ছে নানা খেলাধূলার। এছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা অর্জন, অনলাইন প্লাটফরম, বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ, পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু, শিশু শ্রম ও মাদক বিরোধী কার্যক্রমসহ নানা বিষয়ে জ্ঞানার্জন করছে কিশোর কিশোরীরা। সম্প্রতি সরেজমিন গেলে কিশোর কিশোরী, শিক্ষক ও সচেতন মানুষসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে ওঠে আসে এমন তথ্য। শ্রীবরদী উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রায় তিন বছর আগে শ্রীবরদীর পৌর শহর সহ বিভিন্ন ইউনিয়নে গঠন করা হয় ১১ টি কিশোর কিশোরী ক্লাব। প্রতিটি ক্লাবে নেয়া হয় ১১ হতে ১৯ বছর বয়সে ৩০ জন করে কিশোর-কিশোরী। এদেরকে পড়ালেখার পাশাপাশি বিকালে দুই ঘন্টা করে শিখানো হয় সংগীত, কবিতা আবৃত্তি শিক্ষাসহায়ক নানা বিষয়। এখানে মেধা বিকাশে শিখাচ্ছেন প্রশিক্ষিত শিক্ষক শিক্ষিকার। প্রতিদিন ক্লাসে দেওয়া হয় পুষ্টিকর নাস্তা। এতে আরো উজ্জীবিত হয়ে ওঠে কিশোর কিশোরীরা। এছাড়াও আন্তর্জাতিক নারী দিবস, শিশু দিবসসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসে অংশ গ্রহণে এদেরকে দেখা যায় সরব উপস্থিতি।
কিশোর কিশোরীরা জানায়, আগে তাদের শিখার মতো কোনো ক্লাব বা প্রতিষ্ঠান ছিল না। তারা এথন স্কুল ছুটির দিন বিকেলে ক্লাবে এসে গান, কবিতা শিখতে পারছে। এ ছাড়া নানা ধরনের খেলাধূলার সুযোগ পাওয়ায় তারা খুশি। তাদের মধ্যে অনেকে জানায়, তারা আগে কিভাবে কবিতা আবৃত্তি করতে হয় তা জানতো না। এখন অনেকেই কবিতা আবৃত্তি করতে পারে। নিজে হারমোনিয়াম বাজিয়ে গান গাইতে পারে। শিক্ষিকা ইসরাত জাহান কাকলী জানায়, মেধা বিকাশে তাদেরকে গান, কবিতাসহ নানা ধরনের শিক্ষা দেয়া হয়। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মাসুমা মমতাজ বলেন, পৌরসভাসহ ১১ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কিশোর কিশোরী ক্লাব রয়েছে। ক্লাবগুলোতে রয়েছে একজন করে আবৃত্তি শিক্ষক ও একজন করে সংগীত শিক্ষক। এসব ক্লাবের জন্য দুইজন জেন্ডার প্রোমোটারও রয়েছেন। প্রতিটি ক্লাবে রয়েছে ৩০ জন করে কিশোরী। তার মধ্যে ২০ জন কিশোরী ও ১০ জন কিশোর। প্রতিটি ক্লাবে সপ্তাহে দুই দিন কিশোর কিশোরীদের নিয়ে ক্লাস নেওয়া হয়। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের মাঝে ড্রেস দেয়া হয়েছে। প্রতিদিন দেয়া হয় পুষ্টিকর নাস্তা।
স্থানীয় কয়েকজন শিক্ষক ও রাজনৈনিতক নেতৃবৃন্দ্ব বলেন, এটি সরকারের সময় উপযোগী প্রকল্প। আজকের কিশোর কিশোরী আগামী দিনে দায়িত্ব পালন করবে। সরকারের সাস্টেনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল্ড অর্জন করতে হলে সমাজের সবার অংশ গ্রহণে কিশোর কিশোরীদের অংশগ্রহণ আবশ্যক। তাদের বাদ দিয়ে এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়।